Home শিক্ষা ও কেরিয়ার আইআইটি খড়গপুরে আত্মহত্যা রুখতে অভিভাবকদের জন্যও ইন্ডাকশন, প্রস্তাব বিশেষজ্ঞ কমিটির

আইআইটি খড়গপুরে আত্মহত্যা রুখতে অভিভাবকদের জন্যও ইন্ডাকশন, প্রস্তাব বিশেষজ্ঞ কমিটির

আইআইটি খড়গপুরে আত্মহত্যা রুখতে বড় পদক্ষেপ। পড়ুয়াদের মানসিক চাপের মূল কারণ বাবা-মায়ের ইন্টার্নশিপ ও চাকরির চাপ—জানাল বিশেষজ্ঞ কমিটি। এবার অভিভাবকদের জন্যও থাকবে ইন্ডাকশন প্রোগ্রাম।

IIT Khargpur
আইআইটি খড়গপুরে আত্মহত্যা রুখতে অভিভাবকদের জন্যও ইন্ডাকশন!

আইআইটি খড়গপুরে আত্মহত্যার ঘটনা ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়ে এবার অভিভাবকদের জন্যও ইন্ডাকশন প্রোগ্রামের প্রস্তাব এসেছে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে। কারণ, এক সমীক্ষা উঠে এসেছে, ৮৫% পড়ুয়া মানসিক চাপে ভোগে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ইন্টার্নশিপ ও চাকরি পাওয়ার জন্য চাপের ফলে।

এই ‘অতিরিক্ত অভিভাবকীয় চাপ’ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির ছাত্রদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার সময়। কমিটির মতে, অনেক অভিভাবকই আইআইটির শিক্ষা পদ্ধতি এবং বাস্তব সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তাই তাঁদের সচেতন করাই এই প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য।

এই কমিটি তৈরি হয়েছিল এপ্রিল-মে মাসে, খড়গপুর আইআইটির একাধিক আত্মহত্যার ঘটনার পরে। শুক্রবার সকালে রাজেন্দ্র প্রসাদ হলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় চতুর্থ বর্ষের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র ঋতম মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ। গত সাত মাসে এটি চতুর্থ এবং ২০২৪ সালের জুন থেকে পঞ্চম আত্মহত্যার ঘটনা।

কমিটিতে রয়েছেন কাউন্সেলর, মনোবিদ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ এবং প্রাক্তনীরা। মঙ্গলবার তাঁরা আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং নিজেদের প্রস্তাব জমা দেন।

সুমন চক্রবর্তী বলেন, “৮০%-এর বেশি ছাত্র ছাত্রী জানিয়েছে, বাবা-মায়ের পক্ষ থেকে ভালো ইন্টার্নশিপ ও চাকরির জন্য প্রবল চাপ থাকে। এর থেকেই তৈরি হয় মানসিক চাপ। তাই ইন্ডাকশনের সময় অভিভাবকদের যুক্ত করার ভাবনা। এই বছর থেকেই কার্ষকরী করা সম্ভব হবে।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু কতগুলি ইন্টার্নশিপ করল তা নয়, বরং কোন ইন্টার্নশিপ থেকে কী শিখল, সেটাই আসল। IIT-এর অ্যালামনি নেটওয়ার্ক এবং নিজস্ব সংযোগের মাধ্যমে প্রচুর ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকে। অভিভাবকদের এই বিষয়গুলো জানানো প্রয়োজন।”

শিক্ষকরাও জানিয়েছেন, ইদানীং পড়ুয়ারা শুধু CV সাজানোর জন্য একাধিক ইন্টার্নশিপে অংশ নিচ্ছে, অনেক সময়েই তা বাবা-মা-র মাধ্যমে জোগাড় করা হয়। এতে চাপ বাড়ছে, ফলে মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

এক অধ্যাপক বলেন, “শুধু পড়াশোনা নয়, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষ থেকেই অনেক পড়ুয়া চাকরি পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। শিক্ষকরা যতটা পারেন সাহস দেন, কিন্তু পরিবারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যায় না।”

বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—

  • ছাত্রদের জন্য হোস্টেলে পূর্ণকালীন প্রশাসনিক পেশাদার নিয়োগ
  • মেসে ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার, যাতে বোঝা যায়, কেউ প্রতিনিয়ত খাবার মিস করছে কিনা
  • পাঠ্যক্রমে জীবনদক্ষতা, সামাজিক-মানসিক শিক্ষা ও মানসিক স্থিতি সংক্রান্ত কোর্স যোগ করা
  • কাউন্সেলরের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাঁদের ওরিয়েন্টেশন করানো
  • হোস্টেলেই কাউন্সেলরের ঘন ঘন উপস্থিতি, যাতে কাউন্সেলিংকে ঘিরে থাকা সামাজিক বাধা ভাঙা যায়

আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই এই কমিটি একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবে বলেও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ১ আগস্ট থেকে বদল UPI-তে! দিনে কতবার ব্যালেন্স দেখবেন, কোন সময়ে অটো-পে চলবে—জানুন নতুন নিয়ম

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version