নিজেই নিজেকে বলতেন, ‘ভাঙা বুদ্ধিজীবী’ অর্থাত্ ব্রোকেন ইন্টালেকচুয়াল। কথা বলতে চাইতেন! নিজের কথা, দেশের কথা ও দশের কথা। কিন্তু মানুষ বুঝতে পারেননি। কেউ কেউ বলতেন কী সব বানায়, কোনও ব্যাকারণ নেই।
ছেলেবেলা থেকেই হাতে কলম তুলে নিয়েছিল ঢাকাই ভবা। ‘অভিধারা’ পত্রিকায় লিখতেন ঋত্বিক ঘটক। ১৯৪৭ এর দেশভাগের সময় নিজের জন্মভিটে ছেড়ে রিফিউজি হতে হয় ঋত্বিক ঘটককে। কল্পনায় নিজের চরিত্রদের সঙ্গে কথা বলতেন ঋত্বিক।
নিজেই পরিচালক, নিজেই প্রযোজক, নিজেই অভিনেতা। টাকা ছিল না কিন্তু নেশা ছিল হাতে টাকা পেলেই ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যেতেন শুটিংয়ের কাজে। বানিয়েছেন ৮ টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের সিনেমা। অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে একাধিক কাজ। রামকিঙ্কর বেইজ, ছৌ-নৃ্ত্য-সহ কাজ করেছেন একাধিক তথ্যচিত্রে। তাঁর স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিতে অভিনয় করেছেন সুভাষ ঘাইয়ের মতো অভিনেতারা। লিখে গেছেন একাধিক নাটক।
এইবার ঋত্বিক ঘটকের চরিত্রে অভিনয় করবেন শিলাজিৎ মজুমদার। ঋত্বিক ঘটকের জীবনীটাকে খুব সুন্দর করে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ছবিতে।
তাঁর সম্বন্ধে অজানা বহু ঘটনা যা একেবারে বিশ্বাসযোগ্য এবং সঠিক তথ্য তুলে ধরাটাই উদ্দেশ্য। ঋত্বিক ঘটকের জীবনের স্ট্রাগল, তাঁর কাজ, যাকে বলা যায় একেবারে তথ্য নির্ভর। খুব সাধারণভাবে ঋত্বিক ঘটক সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে এই ছবির মাধ্যমে।
শিলাজিৎ জানান, ‘আমাকে ঋত্বিকের চরিত্রে ভাবা হয়েছে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তবুও যখন পরিচালক ও প্রযোজক আমার কাছে এই অফার নিয়ে এসেছিল। আমি একটু ভাববার সময় চেয়েছিলাম। ফের ঋত্বিক ঘটকের তৈরি ছবিগুলো দেখি।‘
শিলাজিৎ জানিয়েছেন, ‘পরিচালক শুভঙ্কর ভৌমিক এবং প্রযোজক মিলন ভৌমিকের মত ছিল, ‘একটা চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য তাঁর মতোই কাউকে খুঁজে পেতে হবে সেটা নয়। বরং, সেটা তৈরি করে নেওয়াটাই বড় ব্যাপার।’ পরে নিজেও সেটার সঙ্গে একমত হই।‘
কলমের সবটুকু কালি খরচ করে যেতে পারেননি বলেই তাঁর সমুদ্রসম চিন্তাভাবনার ভাগীদার হতে আজও ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে মেতে ওঠেন বিশ্বের বাঘা বাঘা গবেষকরা। অসম্পূর্ণতাতেই সম্পূর্ণ তিনি। কেউ কেউ বলেন, ঋত্বিক যেন অর্ধেক জলের গ্লাস। তাঁর ভরাট এবং শূন্যতা দুই জায়গাই এখন গবেষণার বিষয়।
ছবি- ইন্সটাগ্রাম
বিনোদনের খবরের সব আপডেট পেতে পড়ুন খবর অনলাইন