আলোর উৎসব দীপাবলিকে ঘিরে রাজধানী দিল্লি ভয়ংকর বায়ুদূষণের কবলে পড়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনই দূষিত বাতাসের জেরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা বাতাসের গুণমানের সূচক ‘পুয়র’ বা ‘ভেরি পুয়র ক্যাটেগরি’-তে ঘোরাফেরা করছে। তবে শুধু দিল্লি কেন, দীপাবলিতে বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে কলকাতাও কিছু কম যায় না।
ল্যানসেট প্ল্যানেটরি হেলথ নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, কম সময়ের মধ্যে বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর ভারতে ৩৩ হাজার মানুষের প্রাণ যায়। দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দিল্লি।
চিকিৎসকদের মতে, বায়ুদূষণের প্রভাবে শরীর বিশেষ করে স্নায়ুর প্রচণ্ড ক্ষতি হয়। বায়ু দূষিত থাকার কারণে ক্ষতিকর ধাতু মার্কারি, সীসা ও ভোলাটাইল বিভিন্ন যৌগের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। এ সব পদার্থ রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে ফোলা ভাব ঘটায়। অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের পাশাপাশি স্নায়ুর প্রচণ্ড ক্ষতি করে। অ্যালঝাইমার্স, পারকিনসন্সের মতো স্নায়ুঘটিত রোগের পাশাপাশি সেরিব্রাল স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
দিল্লির বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বাড়ার কারণে শহরবাসীর মধ্যে অ্যাজমা ও ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও রোগী যাঁদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁরা সর্দিকাশি, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় বেশি পরিমাণে ভুগছেন।
ক্লাইমেট ট্রেন্ডসের করা সমীক্ষায় বলা হয়েছে, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় ফসল কাটার পর জমিতে গোড়া জ্বালানোর ফলে সেই ধোঁয়া দিল্লিতে পৌঁছে গিয়ে দূষিত করছে বাতাস। ২০১৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণা চালানো হয়।
এয়ার কোয়ালিটি সলিউশনস সংস্থা এয়ারভয়েজের করা সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে দীপাবলিতে বাজি জ্বালানোর পর কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা বাতাস ভয়ংকর দূষিত থাকে। বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ ন্যাশনাল অ্যাম্বিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। গত বছরের হিসাবে দীপাবলির পর দেশের ৫টি দূষিত রাজ্যের অন্যতম হল বিহার, পঞ্জাব ও রাজস্থান।