Home শরীরস্বাস্থ্য ব্লু জোন: পৃথিবীর সেই রহস্যময় অঞ্চল যেখানে মানুষ সহজেই বাঁচেন শতবর্ষ

ব্লু জোন: পৃথিবীর সেই রহস্যময় অঞ্চল যেখানে মানুষ সহজেই বাঁচেন শতবর্ষ

ব্লু জোন হল পৃথিবীর সেই রহস্যময় অঞ্চল, যেখানে মানুষ সহজেই শতবর্ষ পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। জানুন দীর্ঘায়ুর রহস্য।

0
মানুষ সহজেই বাঁচেন শতবর্ষ

আসলে পৃথিবীতে “ব্লু জোন” নামে আলাদা করে কোনও ভৌগোলিক অঞ্চল নেই। এটি একটি রূপক অর্থে দেওয়া নাম। বিশ্বের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে গড় আয়ু অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি। এমনকি ৯০ থেকে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকেন সেখানকার মানুষ। বিজ্ঞানীরা এই অঞ্চলগুলিকেই “ব্লু জোন” নামে চিহ্নিত করেছেন।

 কীভাবে আবিষ্কার হল ব্লু জোন?

২০০৪ সালে দুই গবেষক জিয়ান্নি পেসে এবং মাইকেল পোল্লান ইতালির সার্ডিনিয়ার নুয়োরো প্রদেশে গিয়ে লক্ষ্য করেন—সেখানকার বহু মানুষ শতবর্ষ পার করেও সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। এখান থেকেই প্রথম ‘ব্লু জোন’ ধারণার সূচনা। পরে লেখক-সাংবাদিক ড্যান বুয়েটনার আরও গবেষণা চালিয়ে বিশ্বে মোট পাঁচটি ব্লু জোন শনাক্ত করেন।

পৃথিবীর পাঁচটি প্রধান ব্লু জোন

  1. সার্ডিনিয়া (ইতালি) – ইউরোপের প্রাচীন কৃষক সমাজ, পরিশ্রমী জীবনযাপন, ভেজালমুক্ত খাবার।
  2. ইকারিয়া (গ্রিস) – প্রচুর পরিমাণে অলিভ অয়েল, সবুজ শাকসবজি ও রেড ওয়াইন সেবন করেন।
  3. ওকিনাওয়া (জাপান) – সয়াবিন জাতীয় খাবার, মাছ, এবং ‘তাই চি’ নামক মার্শাল আর্টে পটু।
  4. লোমা লিন্ডা (আমেরিকা) – এখানকার মানুষ নিরামিষভোজী, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত।
  5. নায়াইয়ো (কোস্টারিকা) – ফল, সবজি, ও স্থানীয় ভেজালমুক্ত খাবার তাঁদের দীর্ঘায়ুর মূল চাবিকাঠি।

সাম্প্রতিক কালে সিঙ্গাপুরকেও ব্লু জোন হিসাবে ধরা হচ্ছে, কারণ সেখানে গড় আয়ু দ্রুত বেড়েছে এবং জীবনযাত্রা স্বাস্থ্যকর।

Blue zone

দীর্ঘায়ুর রহস্য

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জিনগত কারণে মাত্র ২০-৩০% প্রভাব পড়ে। বাকিটা নির্ভর করে তাঁদের জীবনযাত্রার উপর।

  • সহজ ও চাপমুক্ত জীবন
  • নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম
  • নিরামিষভিত্তিক খাবার
  • মাংস খুবই কম, কেউ কেউ সপ্তাহে একবার খান
  • প্রচুর সবজি, ফল, হোল গ্রেন, শস্যজাত খাবার
  • ভেজালমুক্ত ও প্রাকৃতিক খাদ্য
  • পরিবার ও সমাজকেন্দ্রিক জীবন

এই অভ্যাসের কারণে তাঁরা স্থূলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা ক্যানসারের মতো জীবনযাপনজনিত রোগ থেকে দূরে থাকেন।

শিক্ষণীয় দিক

ব্লু জোনের গল্প শুধু দীর্ঘায়ুর নয়, এটি এক স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের বার্তা। আমরা যদি তাঁদের মতো—

  • ভেজালমুক্ত খাবার খাই,
  • বেশি করে সবজি ও ফল খাই,
  • মদ্যপান সীমিত রাখি,
  • নিয়মিত শরীরচর্চা করি,
  • এবং পরিবার-সমাজের সঙ্গে যুক্ত থাকি,

তাহলেই আমাদের জীবনও হতে পারে সুস্থ ও দীর্ঘ।

আরও পড়ুন:

জলে ভেজানো আমন্ড বাদামের স্বাস্থ্যগুণ: মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র ও ত্বকের জন্য কেন উপকারী?

খাবার খাওয়ার পর স্নান কতটা ক্ষতিকর, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

ডাবের জলে ভেজানো চিয়া সিডস: সকালে খালি পেটে খেলে মিলবে ৭ অসাধারণ উপকারিতা


NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version