আজ প্লাস্টিকের দূষণে সবচেয়ে বেশি দূষিত আমাদের পৃথিবী। আজ, জলে, স্থলে, আকাশের পাশাপাশি আমাদের খাদ্য ও জলে এমনকি শরীরেও মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা। মানুষের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর পদার্থ বলে এই মাইক্রোপ্লাস্টিককেই চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক কালে Microplastic নামক একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খেলেও রক্তচাপ বাড়ে। কারণ প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খাওয়ার সময় প্লাস্টিকের কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের শরীরে ঢোকে। সরাসরি রক্তে মিশে যায়। এই প্লাস্টিকের কণা থেকে হার্টের অসুখ, হরমোনের হেরফের এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিজ্ঞানীরা।
অস্ট্রিয়ার ডানিউবের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ মেডিসিনের একদল গবেষক এই গবেষণা চালান। তাঁদের গবেষণাপত্রই প্রকাশিত হয়েছে Microplastic নামক বৈজ্ঞানিক জার্নালে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব ব্যক্তি প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খাননি তাঁদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ছিল। আবার যারা প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খেয়েছেন তাঁদের রক্তে প্লাস্টিকের কণা মিশেছে আর রক্তচাপও বেড়ে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
আমেরিকায় বাড়ছে টেফলন ফ্লু, এই অসুখের কারণ আপনার ঘরেই লুকিয়ে নেই তো
বেশ কয়েক বছর আগে পৃথক আরেকটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছিলেন প্রতি সপ্তাহে মানবশরীরে প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খাওয়ার সৌজন্যে কমপক্ষে ৫ গ্রাম প্লাস্টিকের কণা রক্তে মেশে। বিজ্ঞানরা প্লাস্টিকের কণা শরীরে ঢোকা আটকাতে জল ফুটিয়ে ফিল্টার করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
নানান রকম গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ দোকান বাজার, শপিং মলে যে সব পানীয় জলের প্লাস্টিকের বোতল পাওয়া যায় তাতে আগের অনুমানের চেয়ে ১০-১০০ গুণ বেশি প্লাস্টিকের ন্যানোপার্টিকেলস বা অনুকণা থাকে। ন্যানোপার্টিকেলস একটা চুলের চেয়েও সরু হওয়ায় তা অনায়াসে রক্তের মাধ্যমে পেট, ফুসফুসের কোষে ঢুকে পড়ে। এক লিটার প্লাস্টিকের বোতলের জলে এমন ২,৪০,০০০ প্লাস্টিকের কণা থাকতে পারে। প্লাস্টিকের কণা শরীরে ঢুকলে হরমোনের হেরফের থেকে মস্তিষ্ক, হার্ট, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।