ভারতীয় দম্পতিদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে স্থুলতার সমস্যা। এনিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের গবেষকরা গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চালান। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজোড়া (২৭.৪%) দম্পতি স্থুল। আইসিএমআর-ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্যানসার প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের গবেষকরা মিলে ৫২,৭৩৭ জন ভারতীয় দম্পত্তির ওপর গবেষণা চালান। গবেষকদের মতে, স্বামী বা স্ত্রী জেনে বা না বুঝে একে অপরের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত অংশীদার হয়ে উঠছেন।
ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া, রাতে বেশি পরিমাণে ভাজাভুজি খাবার খাওয়া, অলস জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে বাড়ছে দেহের ওজন। দম্পতিরা একে অপরকে অনুসরণ করে। শহরের কমবয়সি দম্পতিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
গবেষণায় দেখা গেছে, ধনী দম্পতিরা বেশি পরিমাণে স্থুল। ভারতের ৪৭.৬% ধনী দম্পতি বেশি স্থুল। ৩৮.৪% শহরে বসবাসকারী দম্পতি স্থুল। ২৮.৯% ছোটো পরিবারে থাকা দম্পতির মধ্যে স্থুল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সমবয়সি ২৮.৮% দম্পতি আর একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা ৩১.৪% দম্পতির মধ্যে স্থুল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যে সব দম্পতি রোজ সংবাদপত্র পড়ে এমন ৩৬.৯% দম্পতি স্থুল। আবার একসঙ্গে টিভি দেখা ৩২.৮% দম্পতি স্থুল। আমিষ খাবার বেশি পরিমাণে খেলে স্থুলতার সমস্যা দেখা যায়। ভারতের মধ্যে দক্ষিণের রাজ্যে ৩৭.২% আর উত্তরের রাজ্যে ৩৩.৫% মানুষ স্থুল। কেরালা, জম্মু-কাশ্মীর, মণিপুর, দিল্লি, গোয়া, তামিলনাড়ু ও পঞ্জাবের ৪২% দম্পতি স্থুল। বাড়ি বাড়ি স্থুলতা যাতে নীরব মহামারীর আকার না নেয় তার জন্য এখনই মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের অধীনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজির বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে দেখেন, অতিরিক্ত নুন খাওয়ার ফলে ভারতীয়দের মধ্যে হাইপারটেনশনে, স্ট্রোক, হার্টের অসুখ ও কিডনির অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডক্টর শরণ মুরলীর নেতৃত্বে গবেষণা চালানো হয় আইসিএমআরের তত্ত্বাবধানে পঞ্জাব ও তেলেঙ্গানায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু’র সুপারিশ অনুযায়ী, প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ৫ গ্রাম করে নুন খাওয়া যথেষ্ট। কিন্তু ভারতের শহরের বাসিন্দারা প্রতিদিন গড়ে ৯.২ গ্রাম আর গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিন গড়ে ৫.৬ গ্রাম নুন খাচ্ছেন। গবেষণায় সোডিয়াম ক্লোরাইডের জায়গায় পটাশিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড মিশিয়ে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কম সোডিয়াম ক্লোরাইড খেলে হাইপারটেনশনের রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আরও পড়ুন: দাঁতের যত্ন নিলে বাঁচতে পারেন ক্যানসারের হাত থেকে! গবেষণার রিপোর্টে জানাল এইমসের
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

