মৌ বসু
প্রতি বছর অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয় মারণরোগ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির সাম্প্রতিক গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে ৬টি রিস্ক ফ্যাক্টরকে। গবেষণায় বলা হয়েছে, জীবনযাপনে কিছুটা অদলবদল করে, স্বাস্থ্যকর কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা যায় ক্যানসার।
ছ’টি নিয়ম হল – এক, ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া; দুই, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া; তিন, কাজকর্মে সক্রিয় থাকা; চার, হাঁটাচলা করা; পাঁচ, ব্যায়াম করা এবং ছয়, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির ‘সিএ: আ ক্যানসার জার্নাল ফর ক্লিনিসিয়ান্স’ (CA: A Cancer Journal for Clinicians) নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র।
গবেষকরা ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসাবে ধূমপানে আসক্তির পাশাপাশি প্যাসিভ স্মোকিং বা ধূমপান না করেও সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়া শরীরে ঢোকাকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি, মদ্যপান করা, অতিরিক্ত ওজন, অপুষ্টিকর খাবার খাওয়া, শারীরিক ভাবে অলস থাকা, সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি, এইচপিভি ভাইরাসের সংক্রমণকেও ক্যানসার হওয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির গবেষণায় দেখা গেছে, বছরে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয় ফুসফুসের ক্যানসারে। মৃত্যুও হয় বেশি ফুসফুসের ক্যানসারে। প্রাণঘাতী ক্যানসারের তালিকায় এর পরই আছে ব্রেস্ট ক্যানসার। এ ছাড়াও স্কিন মেলানোমা বা ত্বকের ক্যানসার, কোলোরেক্টাল ক্যানসার বা অন্ত্রের ক্যানসার, লিভার ক্যানসার ও খাদ্যনালির ক্যানসারও প্রাণঘাতী।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০% বিভিন্ন রকমের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হল ধূমপান। ফুসফুসের ক্যানসার ছাড়াও ব্লাডার, গলা ও প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারের কারণ হল ধূমপান। আবার স্থুলতা বা অতিরিক্ত ওজনকে কোলোরেক্টাল, ব্রেস্ট ও খাদ্যনালির ক্যানসারের জন্য দায়ী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়ার কারণে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ হয়। ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষের বৃদ্ধি হয় বেশি পরিমাণে। ক্যানসার চিকিৎসাও জটিল হয় স্থুলতার কারণে। আবার মদ্যপানকে লিভার, মুখগহ্বর, কোলন, গলা ও ব্রেস্ট ক্যানসারের জন্য দায়ী করা হয়েছে। অলস জীবনযাত্রার কারণে কোলন, ব্রেস্ট, এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য হতে পারে সার্ভিকাল, ভ্যাজাইনা, পেনিস, অ্যানাস ও অরোফ্যারিঙ্কসের (টনসিল ও গলার মধ্যবর্তী অংশ) ক্যানসার। যৌন সংসর্গের সময় ত্বক থেকে ত্বকে সংক্রমণ হয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের।
আরও পড়ুন
বাড়িতে বসে ৫ মিনিটেই বুঝতে পারবেন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কি না