Home খবর বাংলাদেশ প্রয়াত লেখক ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর, বয়স হয়েছিল ৯৪

প্রয়াত লেখক ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর, বয়স হয়েছিল ৯৪

লেখক, গবেষক ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। ৯৪ বছর বয়সে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে বামপন্থী আন্দোলন ও গবেষণা জগতে শোকের ছায়া।

বদরুদ্দীন উমর

লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতির অন্যতম বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম সংবাদমাধ্যমকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি ছিলেন বামধারার রাজনীতিবিদ, তাত্ত্বিক, লেখক ও সমাজবিশ্লেষক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তরের সময়ে তাঁর বিশ্লেষণ বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছিল।

শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম কলেজে দর্শনের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন ও অর্থশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরে এসে তিনি শিক্ষকতা চালিয়ে যান। তবে ১৯৬৮ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হন।

ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী বদরুদ্দীন উমর ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে “পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি” (তিন খণ্ড), “সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা”, “বাঙালীর সমাজ ও সংস্কৃতির রূপান্তর”, “ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ” এবং “চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাংলাদেশের কৃষক”

২০২৫ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পুরস্কার নাকচ করে তিনি বলেন, “১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমি কখনও তা গ্রহণ করিনি। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেওয়া এই পুরস্কারও গ্রহণ করা সম্ভব নয়।”

বদরুদ্দীন উমর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বামধারার রাজনীতিকে শক্ত ভিত্তি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

তাঁর মৃত্যুতে দেশের বামপন্থী আন্দোলন, সাহিত্য ও গবেষণা জগতে গভীর শোক নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর প্রস্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বৌদ্ধিক অঙ্গনে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গোয়ালন্দে মৃত ধর্মগুরুর দেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিল মৌলবাদীরা, দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version