সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে ঢাকা শহরকে অচল করে দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। এইদিন রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।
আজ বিকেল ৫টার দিকে পুলিশের বাধা পেরিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিএসএমএমইউর ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল মৎস্য ভবন পেরিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে যাওয়ার পথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে, এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কে এইচ মাহিদ উদ্দিন বলেছেন, ‘‘হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা দেওয়ার পর কোটা আন্দোলনের আর কোনও যৌক্তিকতা নেই। কাজেই কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলনরত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা টানা ১০ দিন ধরে চাকরিতে সমস্ত ধরনের কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘‘১০ দিন ধরে শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের গাড়ি চলাফেরা ব্যাহত হয়েছে। মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে সেই চেষ্টা করা হয়েছে।’’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এই আন্দোলন সফল করতে সোমবার ৬৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে ২৩ জন সমন্বয়ক এবং সহ-সমন্বয়ক হিসেবে ৪২ জন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিনিধিদের এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমাদের কোনও কমিটি করার পরিকল্পনা ছিল না। সরকারের নীরবতার কারণে আমরা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন চালিয়ে যেতে প্রাথমিকভাবে এই কমিটি গঠন করেছি।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন সুসংগঠিত হওয়ার জন্য এবং অন্য কেউ যেন কোনও সুবিধা নিতে না পারে সে জন্য সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রতিনিধি নিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে।