Home খবর বাংলাদেশ প্রয়াত সনজিদা খাতুন, দুই বাংলায় শোকের ছায়া

প্রয়াত সনজিদা খাতুন, দুই বাংলায় শোকের ছায়া

0

দুই বাংলার সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এল শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট সংস্কৃতিকর্মী, সংগীতশিল্পী, সংগঠক, গবেষক এবং শিক্ষাবিদ ছায়ানটের সভানেত্রী সনজিদা খাতুন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি ডায়াবিটিস ও কিডনির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চার এক উজ্জ্বল পথপ্রদর্শক ছিলেন সনজিদা খাতুন। তাঁর হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ছায়ানট’, যা আজও সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিদ্যমান। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও প্রসারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাম্প্রদায়িক বিভাজন দূর করে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি আজীবন কাজ করেছেন।

১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা সনজিদা খাতুন বেড়ে ওঠেন এক বিদগ্ধ পরিবারে। তাঁর বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক, আর মা সাজেদা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই তিনি সাহিত্য ও সংগীতচর্চার প্রতি আকৃষ্ট হন।

শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি অর্জন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।

সনজিদা খাতুন রবীন্দ্রনাথের আদর্শকে আত্মস্থ করে সংস্কৃতি চর্চার এক নতুন ধারা তৈরি করেছিলেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বভারতী তাঁকে ‘দেশিকোত্তম’ সম্মানে ভূষিত করে। এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ প্রদান করে। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করে। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘একুশে পদক’ এবং ‘বাংলা অ্যাকাদেমি সাহিত্য পুরস্কার’-এ ভূষিত করেছে।

নতুন করে বলার নয়, তাঁর প্রয়াণে দুই বাংলার সংস্কৃতি মহলে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। সংগীত ও সাহিত্যচর্চায় তাঁর অবদান আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version