বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় দেশে ফেরার সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। বুধবার জয়পুরহাটে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির একটি মামলায় অভিযোগকারী আদালতে উপস্থিত না থাকায় বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে লন্ডনে একটি বক্তৃতার পর এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই সময় আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগে জয়পুরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু প্রায় এক দশক ধরে মামলা চলার পর অভিযোগকারীর অনুপস্থিতিতে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন।
মামলা খারিজ এবং দেশে ফেরার সম্ভাবনা
এই রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলির তালিকা আরও ছোট হল। চলতি মাসেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হিংসা এবং আর্থিক দুর্নীতির মামলাগুলি থেকেও মুক্তি মেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাগুলি তারেক রহমানের দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে ফেরার পথ সুগম করতে পারে।
রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তারেকের দেশে ফেরার সম্ভাবনা বিএনপির রাজনৈতিক সমীকরণকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে পারে। একদিকে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বে কার্যকর নেতৃত্বের প্রয়োজন—এ সবই তারেকের প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব বাড়িয়েছে।
অতীত মামলা এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট
তারেক রহমান ২০০৮ সালে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে লন্ডনে নির্বাসিত হন। তখন শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বেআইনি লেনদেন এবং হাই কমিশনে হামলার মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক মামলা প্রত্যাহারের ঘটনা রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা সৃষ্টি করেছে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কেবল বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতিকেই নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতির সামগ্রিক চিত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। একদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিরোধ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলের নজর, এই প্রেক্ষাপটে তারেকের প্রত্যাবর্তন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।