Home খবর বিদেশ পারমাণবিক শক্তিচালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নিয়ে সাংঘাতিক কর্মকাণ্ড! স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়ল বেজিংয়ের...

পারমাণবিক শক্তিচালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নিয়ে সাংঘাতিক কর্মকাণ্ড! স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়ল বেজিংয়ের ‘বড় পরিকল্পনা’

0

নতুন স্যাটেলাইট ছবি এবং চিনা সরকারি নথি বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা গেছে, চিন একটি ভূমিভিত্তিক প্রোটোটাইপ পারমাণবিক রিয়্যাক্টর নির্মাণ করেছে। এ ভাবেই নিজেদের প্রথম পারমাণবিক শক্তিচালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে তারা। বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ নৌবহর থাকা সত্ত্বেও চিনের নৌবাহিনী দ্রুত আধুনিকীকরণ হচ্ছে। পারমাণবিক ক্যারিয়ার যুক্ত করা চিনের সামুদ্রিক ক্ষমতার ক্ষেত্রে আরও একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হবে, যা তাদের “ব্লু-ওয়াটার” ফোর্সে পরিণত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আর এটা সম্ভব হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে চিন।

কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো তং ঝাও সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, “পারমাণবিক চালিত ক্যারিয়ার নির্মাণ চিনকে প্রথম শ্রেণির নৌশক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করবে, যেখানে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স রয়েছে।” এই ধরনের সাফল্য অর্জন জাতীয় মর্যাদার প্রতীক হবে, যা অভ্যন্তরীণ জাতীয়তাবোধকে জাগ্রত করার পাশাপাশি চিনের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে বলে মনে করছেন তিনি।

New Project

ক্যালিফোর্নিয়ার মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষকরা সিচুয়ান প্রদেশের লেশান শহরের কাছে একটি পর্বতস্থল পরিদর্শনের সময় এই তথ্য আবিষ্কার করেন। আগে ধারণা করা হয়েছিল, এই স্থানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্লুটোনিয়াম বা ট্রিটিয়ামের জন্য রিয়্যাক্টর নির্মাণ হচ্ছে, তবে পরবর্তীতে জানা যায় এটি একটি বড় যুদ্ধজাহাজের জন্য পারমাণবিক রিয়্যাক্টরের প্রোটোটাইপ। এই প্রকল্পটি “লংওয়ে” বা “ড্রাগন মাইট” প্রকল্প হিসেবে পরিচিত, যা “পারমাণবিক শক্তি উন্নয়ন প্রকল্প” হিসেবেও উল্লেখিত।

স্যাটেলাইট ছবি ও চিনের সরকারি নথিপত্র বিশ্লেষণে গবেষকরা দেখতে পান সিচুয়ানের চেংদু থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরে মুচেং অঞ্চলে নতুন অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে যেখানে একটি প্রোটোটাইপ রিয়্যাক্টর স্থাপিত হচ্ছে। নথি অনুযায়ী, চিনের নৌবাহিনী উন্নয়নের দায়িত্বে থাকা ৭০১ ইনস্টিটিউট ক্যারিয়ার-আকৃতির বড় জাহাজে রিয়্যাক্টর স্থাপনের জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছে। পরিবেশগত প্রভাব রিপোর্ট অনুযায়ী এই প্রকল্পটি “জাতীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত” এবং এটি “গোপন” প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মিডলবারি ইনস্টিটিউটের গবেষকরা বলেন, “প্রমাণ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে লংওয়ে প্রকল্পটি একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নির্মাণ প্রকল্পের অংশ ।” নরওয়ের অসলো নিউক্লিয়ার প্রজেক্টের বিশ্লেষক জেমি উইথর্নে বলেন, মিডলবারির গবেষকরা এই সম্ভাবনাকে জোরালো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন।

চিন এর আগেও নিজেদের নৌবহরে তিনটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার যুক্ত করেছে, যার মধ্যে প্রথমটি সোভিয়েত জাহাজ থেকে পুনর্নির্মাণ এবং দ্বিতীয়টি চিনের নিজস্ব তৈরি। তবে এগুলো সকলই প্রচলিত শক্তিচালিত এবং “স্কি-জাম্প” পদ্ধতিতে বিমান উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাযুক্ত। চিনের নতুন প্রজন্মের ক্যারিয়ার, টাইপ ০০৩ ফুজিয়ান, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক লঞ্চ ব্যবস্থাযুক্ত। চতুর্থ ক্যারিয়ারটি পারমাণবিক চালিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা চিনের নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে।

এদিকে, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং “প্রথম শ্রেণির” নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দেশের সামুদ্রিক ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করার ওপর জোর দিচ্ছেন। বর্তমানে চিনের নৌবাহিনী ৩৭০টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবহর। পারমাণবিক শক্তিচালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার যুক্ত হলে তা আরও শক্তিশালী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চিনের বর্তমান পরিকল্পনা অনুসারে, পারমাণবিক ক্যারিয়ার যুক্ত হলে তাদের সামরিক বাহিনীর বিশ্বব্যাপী উপস্থিতি ও শক্তিমত্তা আরও বাড়বে এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version