নয়াদিল্লি: তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর দু’দেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। মঙ্গলবার দু’টি সামরিক বিমানে ত্রাণ সামগ্রী-সহ বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল, ডগ স্কোয়াড, সেনাবাহিনীর একটি মোবাইল হাসপাতাল টিম তুরস্কে পাঠিয়েছে ভারত।
ত্রাণসামগ্রী বহনকারী আরেকটি সামরিক বিমান সিরিয়ায় পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ত্রাণসামগ্রী-সহ আরও দু’টি বিমান তুরস্কে পাঠাবে ভারত।
সহযোগিতা ভারতের
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF)-এর ৫০ জনেরও বেশি অনুসন্ধান ও উদ্ধার কর্মী, বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড, ড্রিলিং মেশিন, ত্রাণ সামগ্রী, ওষুধ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে সোমবার সকালে একটি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমান পাঠানো হয়েছিল ভারতের পক্ষ থেকে। বিমানটি তুরস্কের আদানায় অবতরণ করে। যেটি গত সোমবার ভোরে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে একটি।
দ্বিতীয় বিমানটিতে ডগ স্কোয়াড, অনুসন্ধান ও উদ্ধারের সরঞ্জাম, উত্তোলন সরঞ্জাম এবং যানবাহন-সহ আরও এনডিআরএফ টিম পাঠানো হয়। ফ্লাইটে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আগরা-ভিত্তিক আর্মি ফিল্ড হাসপাতালের ৯৯ সদস্যের একটি দলকেও পাঠানো হয়েছে। ওই টিম সেখানে একটি ৩০ শয্যাবিশিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। দলটিতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ, অর্থোপেডিক এবং জেনারেল সার্জনরাও রয়েছেন। এ ছাড়াও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এক্স-রে মেশিন, ভেন্টিলেটর, একটি অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্ট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম।
এখনও পর্যন্ত মোট ১০১ জন এনডিআরএফ সদস্য তুরস্কে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডাক্তার এবং প্যারামেডিকসও। তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেল, ভূমিকম্প এবং এর আফটারশকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪৫টি দেশের আড়াই হাজারের বেশি জরুরি স্বাস্থ্য ও উদ্ধার কর্মী এসে পৌঁছেছে।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি
এখনও পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মোট পাঁচ হাজারেরও বেশি মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩,৪১৯ জন। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬০২ জনে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে দুই দেশ।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বলেছেন, ভয়াবহ ভূমিকম্পে সে দেশে আহত হয়েছেন আরও ২০,৫৩৪ জন। প্রায় ৬,০০০ ভবন ধসে পড়েছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানটেপের কাছে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় প্রায় বেলা দেড়টার দিকে আরও একটি ৭.৫-মাত্রার ভূমিকম্প হয়। সোমবার দফায় দফায় ভূমিকম্পে দু’টি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: পিন ছাড়াই লেনদেন! এ বার ইউপিআই লাইটের সুবিধা পাবেন পেটিএম, ফোন পে ব্যবহারকারীরা