৪৭তম আসিয়ান (ASEAN) শীর্ষ সম্মেলনে এবার সরাসরি উপস্থিত থাকছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বরং তিনি যোগ দেবেন ভার্চুয়ালি, এমনটাই নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
বুধবার সামাজিক মাধ্যমে আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, “এই মাসের শেষে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হতে চলা ৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, দীপাবলির সময়ে ভারতজুড়ে উৎসব চলার কারণে তিনি অনলাইনে যোগ দেবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমি তাঁর সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁকে ও ভারতের জনগণকে শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছি।”
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে বার্তা
আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, তিনি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর এক সহকর্মীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মালয়েশিয়া-ভারত সম্পর্ককে আরও কৌশলগত ও বিস্তৃত স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, “ভারত আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগী। প্রযুক্তি, শিক্ষা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ।”
আনোয়ার আরও যোগ করেন, “মালয়েশিয়া ভারত-মালয়েশিয়া সম্পর্ক ও আসিয়ান-ভারত সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মোদীর প্রতিক্রিয়া
বৃহস্পতিবার এক্স (X)-এ নরেন্দ্র মোদীও লেখেন,
“মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে উষ্ণ আলোচনা হয়েছে। তাঁকে আসিয়ান সভাপতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি এবং আসন্ন সম্মেলনের সাফল্য কামনা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ভার্চুয়ালি আসিয়ান-ভারত সম্মেলনে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছি, এবং আসিয়ান-ভারত সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী।”
সম্মেলনের সময়সূচি ও বিশেষ অতিথিরা
৪৭তম আসিয়ান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে অক্টোবর ২৬ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত কুয়ালালামপুরে।
মালয়েশিয়ার তরফে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সহ একাধিক দেশনেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ট্রাম্প ২৬ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে পৌঁছাবেন বলে জানা গিয়েছে।
কংগ্রেসের কটাক্ষ
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সিদ্ধান্তে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। দলের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ লেখেন,
“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ এড়ানোর জন্যই মোদী কুয়ালালামপুর যাচ্ছেন না। সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রশংসা করা এক জিনিস, কিন্তু তাঁর সঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা করা ঝুঁকিপূর্ণ।”
তিনি আরও দাবি করেন, “কিছুদিন আগে মিশরে অনুষ্ঠিত গাজা শান্তি সম্মেলনের আমন্ত্রণও মোদী একই কারণে এড়িয়ে গিয়েছিলেন।”
জয়রাম রমেশ কটাক্ষের সুরে লেখেন, “দিন কয়েক ধরে প্রশ্ন ছিল—যাবেন কি যাবেন না? এখন নিশ্চিত—প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন না। ‘বচকে রে রহনা রে বাবা!’”
ASEAN-India সম্পর্কের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভারত ও আসিয়ান-র (ASEAN) মধ্যে সংলাপ শুরু হয় ১৯৯২ সালে, প্রথমে ক্ষেত্রভিত্তিক অংশীদারিত্ব হিসাবে।
১৯৯৫ সালে পূর্ণাঙ্গ সংলাপ অংশীদারিত্বে,
২০০২ সালে শীর্ষ সম্মেলন পর্যায়ে,
এবং ২০১২ সালে কৌশলগত অংশীদারিত্বের স্তরে উন্নীত হয়।
বর্তমানে আসিয়ানের ১০ সদস্য দেশ হল—ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনেই, ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার ও কম্বোডিয়া।ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের মূল ক্ষেত্রগুলি হল বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা।
আরও পড়ুন: এইচ-১বি ভিসার ১ লক্ষ ডলারের ফি থেকে ছাড়, ভারতীয়দের বড়ো স্বস্তি
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us