Home খবর বিদেশ কেমব্রিজশায়ারে আবিষ্কৃত রোমান যুগের কবরস্থান, মৃতদেহের চারপাশে বিরল জিপসামের হদিশ

কেমব্রিজশায়ারে আবিষ্কৃত রোমান যুগের কবরস্থান, মৃতদেহের চারপাশে বিরল জিপসামের হদিশ

0

কেমব্রিজশায়ারে রোমান যুগের এক কবরস্থান আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। যেখানে একটি ব্যতিক্রমী সমাধির সন্ধান মিলেছে। এই সমাধিতে মৃতদেহের চারপাশে তরল জিপসাম ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। গবেষকদের ধারণা, এটি কোনো উচ্চবিত্ত ব্যক্তির কবর, যা একটি পাথরের কফিনের ভেতরে বন্ধ ছিল। রোমান যুগে এই প্রথার উল্লেখ পাওয়া গেলেও এর সঠিক উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। জিপসাম ব্যবহারের ফলে মৃত ব্যক্তির পোশাকের ছাপ সংরক্ষিত হয়েছে, যা রোমান যুগের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে।

জিপসাম সমাধি ও অন্যান্য কবর

হেডল্যান্ড আর্কিওলজি সংস্থার মতে, জিপসাম সমাধির প্রচলন সাধারণত রোমান নগরকেন্দ্রগুলিতে দেখা যায়, কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এটি অত্যন্ত বিরল। এই সমাধির জন্য ব্যবহৃত জিপসাম প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের এক খনি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা প্রচুর শ্রম ও ব্যয়ের ইঙ্গিত দেয়। এতে অনুমান করা যায়, মৃতব্যক্তি যথেষ্ট ধনী ছিলেন। হেডল্যান্ড আর্কিওলজির প্রত্নতাত্ত্বিক জেসিকা লোথার লাইভ সায়েন্স-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, এই ধরনের সমাধি তৈরি করা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এতে মৃত ব্যক্তির সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

এই কবরস্থানটি একটি মহাসড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের আগে খননকাজ চালানোর সময় আবিষ্কৃত হয়। এখানে মোট ১৪টি কবর পাওয়া গেছে, যেগুলো কেন্দ্রীয় জিপসাম সমাধির চারপাশে অবস্থিত। এছাড়াও, সীমানা পরিখার বাইরে আরও ৭টি কবর চিহ্নিত হয়েছে। সমাধির ধরনগুলো ছিল নানান রকম—কিছু ছিল পাথরের চেম্বারে, কিছু ছিল দাহকৃত দেহাবশেষ, কিছু কবরের ক্ষেত্রে শিরশ্ছেদ করা মৃতদেহ পাওয়া গেছে, আবার কিছু কফিনের কাঠের অংশের অস্তিত্ব লোহার পেরেক দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে।

সমাধির বস্তু ও গবেষণা

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে, যার মধ্যে গয়না ও ব্যক্তিগত সামগ্রী উল্লেখযোগ্য। কেন্দ্রীয় সমাধির দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি কবরের মধ্যে পাওয়া গেছে এক যুবতীর দেহাবশেষ, যার সঙ্গে রূপার কানের দুল, তাম্র অ্যালয়ের ব্রেসলেট এবং আংটি পাওয়া গেছে। লোথারের মতে, এটি হয়তো পণ বা বিবাহের উপঢৌকন হতে পারে। অন্যদিকে, সীমানা পরিখার বাইরে পাওয়া এক শিশুর কবর থেকে একগুচ্ছ ব্রেসলেট ও একই ধাঁচের কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে।

গবেষকরা এখন এই কবরস্থানের বিস্তারিত বিশ্লেষণ শুরু করেছেন। এর ফলে রোমান যুগের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচিত হতে পারে। গবেষণার মাধ্যমে কবরস্থানটি ব্যবহারের সময়কাল ও রোমান সভ্যতার বিস্তৃত পরিসরে এর ভূমিকা বোঝার চেষ্টা করা হবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version