Home খবর কলকাতা অর্গান-ভায়োলিন বাদন ও লোকসংগীতে শেষ হল সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদের ইতিহাস...

অর্গান-ভায়োলিন বাদন ও লোকসংগীতে শেষ হল সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদের ইতিহাস উৎসব

0
ইতিহাস উৎসবের শেষ দিনে ভায়োলিন বাজিয়ে শোনাচ্ছেন অনামিকা রায়।

নীলাদ্রি পাল

ফানুস ওড়ানো ও বাজি ফাটানোর মধ্য দিয়ে বুধবার রাত ৯টায় শেষ হল সপ্তদশ আন্তর্জাতিক ইতিহাস উৎসব। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চার দিন ধরে এই ইতিহাস উৎসবের আয়োজন করেছিল সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ বড়িশার সাবর্ণ সংগ্রহশালায়। 

এই উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল আদিম মানুষের ব্যবহার করা পাথরের বিভিন্ন অস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী। ঋষি অরবিন্দের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ওভারম্যান ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সহযোগিতায় ঋষি অরবিন্দের নানান তথ্য ও ওঁর সম্পর্কিত ইতিহাসের বেশ কিছু উপাদানও প্রদর্শিত হয়। 

এ ছাড়াও শিল্পী সংসদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মহানায়ক উত্তমকুমারকে নিয়েও ছিল একটি অনবদ্য প্রদর্শনী। উত্তমকুমারের ব্যবহার করা বিভিন্ন সামগ্রীর সঙ্গে প্রদর্শিত হয়েছিল সিনেমার হরেক দুষ্প্রাপ্য তথ্য, ছবি, বুকলেট ও পোস্টার। এ ছাড়াও ছিল ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছায়াছবির হাতে লেখা মূল ম্যানুস্ক্রিপ্টটি। সেখানে ছিল ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্টের ক্যাশ বিভাগে করণিক হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য ১৯৪৭ সালের ১৮ আগস্ট উত্তমকুমারের সই করে জমা দেওয়া এক হাজার টাকার রসিদের কপিটি। 

রামপ্রসাদের সই করা কবুলতিপত্রটি।

সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাধক রামপ্রসাদের নাম। রামপ্রসাদের সঠিক ইতিহাস পরিবেশনের পাশাপাশি প্রদর্শিত হয়েছিল মুঘল আমলে রামপ্রসাদের দস্তখত করা মূল কবুলতিপত্রটি। 

এ বছরের ‘থিম কান্ট্রি’ ছিল কেনিয়া। কেনিয়া সরকারের সহযোগিতায় তুলে ধরা হয়েছিল ভারতের সঙ্গে কেনিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক। এ ছাড়াও ছিল কেনিয়ার বিভিন্ন হাতের কাজ, ডাকটিকিট, মুদ্রা ও বই। 

প্রতি দিনই বিকেলে বসেছিল সাংস্কৃতিক আসর। প্রথম দিন বসেছিল ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে কুইজের আসর। দ্বিতীয় দিন পরিবেশিত হয়েছিল ‘নবদিশারী’ গোষ্ঠীর পরিচালনায় উত্তমকুমার অভিনীত বিভিন্ন ছায়াছবির গান। 

আদিম মানুষ কী ভাবে পাথরের অস্ত্র তৈরি করতেন তৃতীয় দিন দুপুরে তার পাঠ দেন এবং হাতেকলমে করে দেখান অধ্যাপক তমাল দত্ত, রঞ্জনা রায়, দুর্গা বসু এবং দেবাশিস মণ্ডল। ইতিহাসের এই পাঠে যোগ দেয় সোদপুর শ্রীমন্ত বিদ্যাপীঠের ছাত্ররা। 

হাতে কলমে পাথরের অস্ত্র তৈরির শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

ওই দিন বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এই দিনের অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয় এই সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের পূর্বপুরুষ প্রখ্যাত গীতিকার প্রণব রায়ের নামে। এ বছর প্রণব রায় স্মৃতি সম্মান দেওয়া হয় সংগীতশিল্পী ইন্দ্রাণী সেনকে। যোগানন্দ স্মৃতি সম্মান দেওয়া হয় নাট্যকর্মী মেঘনাদ ভট্টাচার্যকে। বৈশাখী রায় চৌধুরী মেমোরিয়াল স্কলারশিপ দেওয়া হয় ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্র, জাতীয় স্তরের প্যারা সাঁতারু বিক্রম মণ্ডলকে।

এই দিনের অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নীপবীথি ঘোষ, রত্না ঘোষাল, এবং সাধন বাগচী। শ্রুতিনাটক পরিবেশন করেন অভিনেতা নীলাদ্রি লাহিড়ী ও কবিতা লাহিড়ী। উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী সম্পূর্ণা লাহিড়ী। 

শেষ দিনে ছিল মাউথ অর্গান ও ভায়োলিনের অনুষ্ঠান। মাউথ অর্গানে চারটি গানের সুর শোনান সোমনাথ নস্কর এবং ভায়োলিন বাজিয়ে শোনান অনামিকা রায়। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় জীবনবোধের লোকসংগীত দিয়ে। পরিবেশন করেন পলাশ চৌধুরী, মৌসুমী মুখার্জি এবং ঝর্ণা বারুই। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সৈকত মুখার্জি। এ দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা জয়জিৎ ব্যানার্জি। 

ছবি: প্রতিবেদক

আরও পড়ুন

শীতের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে বসন্তের আগমন, জানান দিচ্ছে প্রকৃতি

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version