Home খবর কলকাতা সাবর্ণ সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষ্যে জমজমাট নবম রাগ সংগীত বৈঠক ‘মূর্চ্ছনা’

সাবর্ণ সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষ্যে জমজমাট নবম রাগ সংগীত বৈঠক ‘মূর্চ্ছনা’

নীলাদ্রি পাল

কলকাতা: ‘সাবর্ণ সংগ্রহশালা’-র জন্মদিবস উপলক্ষ্যে ‘সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ’-এর আয়োজনে ওই পরিবারের বড়িশার ‘কালিকিংকর ভবন’-এর দুর্গা দালানে বসেছিল নবম রাগ সংগীত বৈঠক ‘মূর্চ্ছনা’।

kathak

কত্থক নৃত্য পরিবেশন করছেন অর্পিতা পান্ডে রায় চৌধুরী এবং উন্মনা মিত্র

রাগ সংগীতের ওপর সাজানো ওই অনুষ্ঠানটি প্রথমে নাচের অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয়। দ্বৈত কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন সাবর্ণ কন্যা অর্পিতা পান্ডে রায় চৌধুরী ও উন্মনা মিত্র। নৃত্যগুরু বিরজু মহারাজের সুযোগ্য ছাত্রী মধুমিতা রায়ের এই দুই ছাত্রী অর্পিতা ও উন্মনা তাদের নৃত্যানুষ্ঠানটি সাজিয়েছিলেন ‘মেঘ মল্লার’ রাগে, ‘দাদরা’ তালে ‘নীল অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায় সমবৃত অম্বর হে গম্ভীর’ গানটি কম্পোজ করে। এরপরে ‘মালিকা’ রাগে ও ‘মালিকা’ তালে ‘তোড়িয়া মঙ্গলম’ পরিবেশনের মাধ্যমে অসাধারণ ‘ভরতনট্যম’ পরিবেশন করেন সাজু জর্জ ও অঞ্জনা ঠাকুরতা ব্যানার্জীর সুযোগ্য শিষ্য সত্যেন সুর।

ভরতনট্যম পরিবেশন করছেন সত্যেন সুর

এরপর ‘সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ’-এর সম্পাদক ও ‘সাবর্ণ সংগ্রহশালা’-র কিউরেটর দেবর্ষি রায় চৌধুরী কলকাতার সঠিক ইতিহাসের প্রতি আলোকপাত করে কলকাতার ইতিহাস রক্ষায় ‘সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ’-এর নিরলস সংগ্রামের কাহিনি বর্ণনা করেন। এই উদ্দেশ্যে কেস নম্বর ডব্লিউ পি ১৪৯৪/২০০১-এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সালের ১৬ মে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে উল্লেখ করা ‘কলকাতার কোনো জন্মদিন নেই, ২৪ আগস্ট কলকাতার জন্মদিন নয় এবং জোব চার্নকও কলকাতার জনক নন’— সেবিষয়ে দর্শক-শ্রোতাদের অবগত করেন।

রাগ সংগীত পরিবেশন করছেন সোনালী বোস

রাগ সংগীতের আসরে এরপর ড. গিরীজাদেবীর ছাত্রী সোনালী বোস ‘মল্লার’ রাগে প্রথমে বিলম্বিত একতালে ও পরে দ্রুত তিনতালে খেয়াল গেয়ে শোনান। এরপর ‘মিশ্রখাম্বাজ’ রাগে ‘ঠুমরী’ গান যৎ তালে। ‘মিশ্রপিলু’ রাগে একটি ‘দাদরা’ গেয়ে অপূর্ব সুন্দর রাগ সংগীতের এই আসরটি শেষ করেন। হারমোনিয়ামে পন্ডিত দেবপ্রসাদ দে এবং তবলায় পণ্ডিত পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ্য সংগত করেন।

বাঁশি বাজিয়ে শোনাচ্ছেন পণ্ডিত সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ও সুভারতী দাস। তবলায় পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়

যন্ত্রসংগীত বিভাগে বাঁশির অনুষ্ঠান দিয়ে শেষ হয় এই রাগ সংগীত বৈঠক ‘মূর্চ্ছনা’। ‘ইমন’ রাগে অপূর্ব বাঁশি বাজিয়ে শোনান পন্ডিত সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে বাঁশিতে যথাযথভাবে সহযোগিতা করেন তাঁর সুযোগ্য শিষ্যা সুভারতী দাস। পরে ‘দেশ’ রাগে একটি ধুন বাজিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন। তবলায় এখানেও অসাধারণ সহযোগিতা করেন আচার্য শঙ্কর ঘোষের সুযোগ্য শিষ্য পন্ডিত পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। পীযূষবাবুর তবলার হাত যেমন দাপটে পরিপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজনে মেলোডিও তৈরি করতে পারেন। হাতের আওয়াজ শুনলেই গুরুজী শঙ্কর ঘোষ এবং আচার্য শামতা প্রসাদের বাজনার কথা মনে পড়ে যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তরুণ বোস।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ’ এবং ‘সাবর্ণ সংগ্রহশালা’-র ব্র্যান্ড আম্বাসাডর অভিনেতা অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিনেতা ও পরিচালক নীলাদ্রি লাহিড়ী।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version