আরব সাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ এবং তার জেরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলায় বর্ষার পৌঁছতে দেরি হওয়ার আশঙ্কা। কারণ, আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আরব সাগরেই বন্দি থাকবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। আরব সাগরের ওই নিম্নচাপ বৃহস্পতিবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এ পরিণত হবে।
মৌসম ভবন মঙ্গলবার জানিয়েছে, আরব সাগরে দানা বাঁধা ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘বিপর্যয়’ (বাংলাদেশের দেওয়া)। সে কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার উপরে কুপ্রভাব ফেলবে ওই ঝড়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় বা মায়ানমারের ঘূর্ণাবর্ত পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে অনুকূল কোনও পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না।’’
আবহাওয়া দফতরের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১ জুন আরব সাগর পেরিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড কেরলে প্রবেশ করার কথা দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর। ইতিমধ্যে ৭দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বর্ষা লাক্ষাদ্বীপের কাছেই আটকে আছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে ঘুর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই নিম্নচাপ আগামী ২৪ ঘন্টায় গভীর থেকে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। শেষ পর্যন্ত এই সিস্টেমের হাত ধরেই কেরলে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
আবহাওয়াবিদদের মতে, যতক্ষণ না আরব সাগর ফের ‘চাপমুক্ত’ হয়, ততক্ষণ মৌসুমি বায়ু অবাধ গতিতে কেরল হয়ে দেশে ঢুকতে পারবে না। ১ জুন যার কেরলে পৌঁছনোর কথা, বিলম্বের পূর্বাভাস মিলিয়ে দিয়ে সেই বর্ষা জুনের ৬ তারিখেও সেখানে ঢোকেনি। দিন দুয়েকের মধ্যে সে ওই রাজ্যে ঢুকবে না বলে মৌসম ভবনের ইঙ্গিত।
ভারতের মূল ভূখণ্ড কেরলের পর একেবারে দক্ষিণ ভারত থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে চলে আসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্য অসম, মেঘালয় হয়ে উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করে বর্ষা। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ৭ জুন বর্ষা প্রবেশের স্বাভাবিক দিন। এখন রাজ্যে যে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে তাতে এ বার বর্ষা বেশ কয়েক দিন পরে ঢুকবে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অনুকূল পরিস্থিতি না থাকার কারণেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকবে দেরিতে। সবমিলিয়ে আগামী সাত দিনে বাংলায় বর্ষাকাল শুরু হবে না। আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি এবং গরম চলবে।
আরও পড়ুন: ফের মৃতের সংখ্যায় সংশোধন, ২৮৮ থেকে ২৭৫ হয়ে আবার ২৮৮