আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। শুক্রবার রাতে পুলিশ একজন যুবককে আটক করেছে, যার নাম সঞ্জয় রায় বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, তরুণী চিকিৎসকের কললিস্টের সূত্র ধরে সঞ্জয়কে আটক করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, ঘটনার রাতে সঞ্জয় সেমিনার হলে উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার সকালে সেমিনার হলে নীল রঙের ম্যাট্রেসের উপর ওই তরুণী চিকিৎসকের নিথর দেহ পাওয়া যায়। দেহের অবস্থান, রক্তের দাগ, এবং অবিন্যস্ত পোশাক দেখে প্রথমেই সন্দেহ হয় সতীর্থ চিকিৎসকদের। ম্যাট্রেসের পাশে পড়ে ছিল তাঁর ভাঙা চশমা এবং চুলের ক্লিপ। প্রাথমিক তদন্তের পর, পুলিশ জানায়, তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে, যার প্রমাণ হিসেবে গলার হাড় ভাঙার চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়াও, তাঁর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণের মামলাও যুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তরুণী চিকিৎসক হাসপাতালের চেস্ট বিভাগের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন এবং রাতে ডিউটিতে ছিলেন। শেষবারের মতো রাতে ২টো নাগাদ তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে নৈশভোজ করেন, এরপর বিশ্রাম নিতে সেমিনার হলে যান। পুলিশের ধারণা, তখনই আততায়ী তাঁকে আক্রমণ করে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অপরাধে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যুতে নৃশংস হত্যার দাবি, উঠছে ধর্ষণের অভিযোগ
তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে লালবাজারের সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় গণধর্ষণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। সেমিনার হলে সিসিটিভি না থাকায়, ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশকে প্রচুর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
চিকিৎসক মহল এবং তরুণীর সহকর্মীরা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।