Home খবর কলকাতা প্রথম বিধবা বিবাহ’-এর স্মৃতিবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণায় বিরতি, মধুসূদনের বাড়ি বিতর্কে সতর্ক কলকাতা...

প্রথম বিধবা বিবাহ’-এর স্মৃতিবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণায় বিরতি, মধুসূদনের বাড়ি বিতর্কে সতর্ক কলকাতা পুরসভা

বিধবা বিবাহ স্মৃতিবাড়ির হেরিটেজ তকমা

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি ঘিরে হেরিটেজ স্বীকৃতি সংক্রান্ত আইনি জটিলতার রেশ এবার পড়ল আরও একটি ঐতিহাসিক ঠিকানায়। উত্তর কলকাতার কৈলাস বোস স্ট্রিটে অবস্থিত যে বাড়িটিকে দেশের ‘প্রথম বিধবা বিবাহ’-এর সাক্ষী বলে মনে করা হয়, সেই বাড়িকে আপাতত হেরিটেজ তকমা দিতে থেমে গেল কলকাতা পুরসভা (KMC)।

পুরসভার হেরিটেজ দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “২০বি কার্ল মার্কস সরণিতে মধুসূদনের বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার বিরুদ্ধে আমরা হাই কোর্টে হেরেছি। নথিপত্র না থাকায় বিচারপতি সেই বাড়িকে তালিকা থেকে বাদ দিতে বলেছেন। এর পরে, ৪৮এ কৈলাস বোস স্ট্রিটের বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করার প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক প্রমাণ পেলে আবার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫৬ সালের ৭ ডিসেম্বর, ব্যাঙ্কুরার পালসডাঙ্গার ব্রাহ্মণন্দ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা কালিমতী দেবীর (যিনি ১০ বছর বয়সেই বিধবা হন) বিয়ে হয় সংস্কৃত কলেজের ছাত্র শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের সঙ্গে। এই বিয়েতে সক্রিয় ভূমিকা নেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, যিনি নিজের অর্থ থেকে ১০,০০০ টাকা ব্যয় করেন। এই বিয়ে হয় রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে, যার তৎকালীন ঠিকানা ছিল ১২ সুকিয়া স্ট্রিট, বর্তমান ৪৮এ কৈলাস বোস স্ট্রিট।

১৮৮৫ সালে মহেন্দ্রনাথ রায়, অখয়কুমার দত্তের জীবনীতে এই বিয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, “৭ই ডিসেম্বর, ১৮৫৬ সালে সুকিয়া স্ট্রিটের রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দেশের প্রথম বিধবা বিবাহ সম্পন্ন হয়।”

তবে এই বাড়ি বর্তমানে একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি। পুরসভার ইন্টিগ্রেটেড বিল্ডিং রেজিস্টার অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বর্তমান মালিক হিসেবে আপডেট করা হয়, যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই পরিবার এখন কলকাতার বাইরে বসবাস করেন।

পুরসভার মেয়র-ইন-কাউন্সিল (হেরিটেজ) স্বপন সমাদ্দার জানান, “দুই বছর আগে আমি এই বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তবে মধুসূদনের বাড়ি সংক্রান্ত মামলায় হেরিটেজ স্বীকৃতি খারিজ হওয়ার পরে এখন আমরা আরও নিশ্চিত প্রমাণ খুঁজছি। এটি বেসরকারি সম্পত্তি, তাই আমাদের আরও সতর্ক হতে হচ্ছে।”

মধুসূদনের বাড়ি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা হাই কোর্টে নতুনভাবে আবেদন করব, যাতে ঐতিহাসিক এই ভবন ভেঙে না ফেলা হয়।”

আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় মেরামতির কাজে নামল পুরসভা

📰 আমাদের পাশে থাকুন

নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

💠 সহায়তা করুন / Support Us

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version