গুজরাতের অহমদাবাদ শহরের মেঘানিনগরে আজ দুপুরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা। অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রিবাহী বিমান এআই১৭১ ভেঙে পড়ল লোকালয়ের মধ্যে। দুর্ঘটনার পর আগুন ধরে যায় বিমানটিতে।
বিমানটি দুপুর ১টা ১০ মিনিটে উড্ডয়ন করেছিল। তবে উড়ানের কিছু সময়ের মধ্যেই সেটি ভেঙে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিমানটি উচ্চতায় পৌঁছনোর আগেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লোকালয়ের উপর আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় দমকলের অন্তত সাতটি ইঞ্জিন। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিমানে মোট ২৪২ জন ছিলেন— যার মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী, ১০ জন কেবিন ক্রু এবং ২ জন পাইলট। অন্যদিকে, রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী বিমানে ১৩৩ জন ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই সংখ্যাগত ভিন্নতা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলেও বিপদের গভীরতা যে বিশাল, তা নিশ্চিত।
দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ (DGCA) নিশ্চিত করেছে, বিমানের দুই পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ডিজিসিএ এবং বিমানবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল।
অহমদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক জানান, “বিমানটি কোন মডেলের, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। উদ্ধারকাজই এখন প্রাথমিক গুরুত্ব।” দুর্ঘটনাস্থলের চারপাশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে উদ্ধারকাজে কোনও বিঘ্ন না ঘটে।
গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোনে কথা বলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূূপেন্দ্র পটেলের সঙ্গে। অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, কেন্দ্রের তরফে প্রয়োজনীয় সমস্ত সহযোগিতা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে একটি পোস্টে লেখেন, “এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। দ্রুত উদ্ধার ও আহতদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছি। গ্রিন করিডর করে হাসপাতালে পৌঁছনোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বহু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও নেতা-নেত্রীরা ইতিমধ্যেই শোকপ্রকাশ করেছেন। গুজরাতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রামমোহন নায়ডু।
ঘটনাস্থল ঘিরে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।