নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচন নিয়ে দেশ জুড়ে উত্তেজনা। এরই মধ্যে দুই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং একজন প্রাক্তন সংবাদপত্র সম্পাদক রাহুল গান্ধী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি প্রকাশ্য বিতর্কের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। শনিবার কংগ্রেস নেতা সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে চ্যালেঞ্জও জানান মোদীকে। তবে এ ব্যাপারে রাহুলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিজেপি নেতারা।
কেজরিওয়াল এফেক্ট!
মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে রাহুলকে পাল্টা আঘাত করেছে বিজেপি। বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের পরে, রাহুল গান্ধী নিজের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে অস্থির। যেকারণে তিনি খবরে থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাহুল কি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী?
বেঙ্গালুরু দক্ষিণ লোকসভা আসনের বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য, রাহুলের বিতর্ক চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, “রাহুল গান্ধী কে, যে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিতর্কে অংশ নেবেন? রাহুল গান্ধী কংগ্রেস দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীও নন, ইন্ডিয়া জোটের কথা না হয় ছেড়েই দিন।”
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “প্রথমে তাঁকে (রাহুলকে) কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করতে বলুন। ফলাফল বেরনোর পর তিনি নিজের দলের পরাজয়ের দায় নেবেন কি না, সেটা স্পষ্ট করুন। তারপরে প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত, আমরা আমাদের বিজেপির যুব সংগঠনের মুখপাত্রদের মাঠে নামাতে প্রস্তুত। তাঁদের সঙ্গেই না হয় কোনো বিতর্কে অংশ নিতে পারেন রাহুল গান্ধী।”
নিজেকে জাহির করা কৌশল!
কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্য়াণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, “প্রথমত, যে ব্যক্তির নিজের তথাকথিত দুর্গ থেকে একজন সাধারণ বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস নেই, তাঁর নিজেকে জাহির করা থেকে বিরত থাকা উচিত। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বসে কে বিতর্কসভা করতে চাইছেন? আমি ওঁর কাছে জানতে চাই যে উনি কি ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রীর মুখ?”
কোন পদাধিকার বলে
এ ছাড়াও বিজেপি মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “কোন পদাধিকার বলে রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কে বসবেন? উনি কংগ্রেস সভাপতিও নন। শুধুমাত্র একজন সাংসদ।”
রাহুল গান্ধীর যুক্তি
রাহুল গান্ধী অবশ্য মুখোমুখি বিতর্কের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানিয়েছেন, “একটি সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য দেশের সামনে প্রধান দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা একটি ইতিবাচক উদ্যোগ হবে। কংগ্রেস এই উদ্যোগকে স্বাগত জানায় এবং আলোচনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে। এই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণও প্রত্যাশা করে দেশ।”
এ ধরনের বিতর্কে তাঁকেই থাকতে হবে, এমন কোনো কথাও বলেননি রাহুল। তাঁর কথায়,তিনি জানান, নিজে অথবা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কে বসতে তৈরি।
কী কারণে মুখোমুখি বিতর্ক
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লকুর, দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অজিত পি শাহ এবং প্রাক্তন সংবাদপত্র সম্পাদক, সাংবাদিক এন রামের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে চলতি লোকসভা নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি বিতর্কে বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কংগ্রেস নেতা রাহুলকে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় সন্তানের জন্য মাতৃত্বের ছুটিতে মানা সংস্থার, অসন্তুষ্ট আদালত পর্যবেক্ষণে যা বলল