নয়াদিল্লি: ফ্ল্যাটের কাজ ‘সম্পূর্ণ’ হওয়ার পর চুক্তিমতো ক্রেতার হাতে চাবি তুলে দেন নির্মাতা। তবে তার পর যদি কোনো খুঁত ধরা পড়ে? প্রতিশ্রুতি মতো যদি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাগুলি না পান? সে ক্ষেত্রে কি নতুন করে ডেভেলপার বা প্রমোটারের কাছে দাবি জানাতে পারবেন না ফ্ল্যাটের ক্রেতা? এই সব প্রশ্নের তাৎপর্যপূর্ণ জবাব দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে অ্যাপার্টমেন্টের দখল করে নেওয়ার সময় ফ্ল্যাট মালিকদের এড়িয়ে যেতে হয় বেশ কিছু বিষয়। সে সময় হয়তো বা নির্মাতার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি ঠিকঠাক পূরণ হয় না। তাই বলে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করে দেওয়া মানেই নির্মাতার দায় শেষ হয়ে যায় না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ এই বিষয়ে জাতীয় উপভোক্তা ফোরামের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানির সময় এই পর্যবেক্ষণ করে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই সংক্রান্ত একটি আবেদন শুনানির জন্য ফের ফোরামের কাছে ফেরত পাঠান বিচারপতি। বলে রাখা ভালো, ক্রেতা এক্ষেত্রে নির্মাতার কাছ থেকে ফ্ল্যাটের দখল নিয়ে নেওয়ার পর খুঁত লক্ষ্য করেন। তিনি ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফোরামের দ্বারস্থ হন। কিন্তু ফোরাম তা খারিজ করে দেয়।
শুধু তাই নয়, ফোরামের এ ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য সমালোচনাও করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ফোরাম কীসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে,তা আদালতের বোধগম্য নয়।
এই মামলায় ফ্ল্যাট মালিকের তরফে সুপ্রিম কোর্টে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, নির্মাতা ‘সমাপ্তির শংসাপত্র’ এবং খেলার জায়গা দেননি। পাশাপাশি কমিউনিটি হল কাম অফিস, জল সরবরাহ, বাগান, জেনারেটর সেট, জিম ইত্যাদির মতো অন্যান্য প্রতিশ্রুতিও সময়মতো রক্ষা করেননি নির্মাতা।
সর্বোচ্চ আদালতের মতে, “বর্তমান যুগের বাস্তবতা বোঝা উচিত। আমরা মনে করি, ফোরাম বর্তমান বাস্তবতা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। বেশির ভাগ ক্রেতা ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনে থাকেন। ফ্ল্যাট মালিকরা এর জন্য ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেন। সেই চুক্তি মতোই তাঁদের ঋণের কিস্তি যথাসময়ে শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে যদি, নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হয়, তা হলেও বাধ্য হয়ে ফ্ল্যাটের দখল নিতে হয় ক্রেতাকে”।
উল্লেখ্য, কলকাতার এক ডেভেলপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী।
আরও পড়ুন: পাইলট প্রশিক্ষণে বেনিয়ম, টাটা গ্রুপের এয়ার এশিয়াকে আর্থিক জরিমানা