মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) এবং কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যে হিংসার ঘটনার সঙ্গে চিন জড়িত। রবিবার উভয় দলের তরফে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবিও তোলা হয়েছে।
জাতিগত হিংসায় জর্জরিত মণিপুর। গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া হিংসার আগুনে পুড়ে এখনও পর্যন্ত কয়েকশো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন উত্তরপূর্বের এই রাজ্যে। দাপট বেড়েছে সশস্ত্র জঙ্গিদের। বিরোধীদের দাবি, মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং।
উদ্ধব সেনার দাবি
এ দিন সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময়, শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত জানতে চান, চিনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের পদত্যাগ করা উচিত এবং রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত।
কংগ্রেসের দাবি
প্রায় একই মত কংগ্রেসের। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কংগ্রেস সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি দাবি করেছেন যে মণিপুরে যে রাইফেলগুলি ধরা হয়েছে তা ‘মেড ইন চায়না’। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী সেখানে গিয়ে শান্তির আবেদন জানান। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণ করে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা উচিত।”
মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের ব্যাখ্যা
বলে রাখা ভালো, গত শুক্রবার সারাদিন ধরেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার ‘নাটক’ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তাঁর পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন এবং রাজভবনের বাইরে ‘নাটক’ শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে ঢুকতে বাধা দেন তাঁর সমর্থকরা। সবমিলিয়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ আর করেননি এন বিরেন সিং। পরবর্তীতে পদত্যাগ করার পরিকল্পনা সরে আসার কারণ ব্যাখ্যা করেন এন বিরেন সিং। জানান, অত্যন্ত মর্মাহত হয়েই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি মণিপুরের হিংসায় ‘বহিরাগত শক্তি’র উসকানি নিয়েও সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমি রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো দেখেছি, বিজেপি অফিসে হামলার চেষ্টাও দেখেছি। মণিপুরের জন্য কেন্দ্র কী করেছে এবং আমরা ৫-৬ বছরে মণিপুরের জন্য কী করেছি, সেসব নিয়ে আমার মনে সন্দেহ জন্মেছিল। তা হলে কি আমরা (বিজেপি) মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলেছি? এটা ভাবলে আমার খারাপ লাগে…কিছুদিন আগে একটি বাজারে একদল মানুষ আমার বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছিল। ভালো লাগছে না…তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এরই মধ্যে আমার বাড়ির সামনে বিশাল সংখ্যক মানুষের জমায়েত দেখে অবাক হয়েছিলাম। আমি ধরে নিয়েছিলাম সবাই হয়তো আমাকে ত্যাগ করেছে। কিন্তু বাড়ির বাইরে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলাম। বুঝলাম মানুষ আমাকে কতটা ভালবাসে। তখনই নিজের সিদ্ধান্ত বদলে ফেললাম”।
আরও পড়ুন: তিস্তা শেতালওয়াড়ের ‘সুপ্রিম’ স্বস্তি, হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ