নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-কে নিয়ে তৈরি বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্রর বিরোধিতার একদিনের মাথায় কংগ্রেস ছাড়লেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একে অ্যান্টনির ছেলে অনিল অ্যান্টনি। বুধবার সকালে টুইট করে নিজের পদত্যাগ ঘোষণা করলেন তিনি।
কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির ডিজিটাল মিডিয়ার আহ্বায়ক ছিলেন অনিল। পাশাপাশি এআইসিসি সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল কমিউনিকেশন সেলের জাতীয় কো-অর্ডিনেটর ছিলেন তিনি। টুইটারে নিজের পদত্যাগপত্র সেঁটে কংগ্রেসের সমস্ত পদ পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
অনিলের অভিযোগ, বিবিসি-র তথ্যচিত্র নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশের পর থেকে রাতে হুমকি ফোন পেয়েছেন। তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় ঘটে যাওয়া অনেক কিছু, বিশেষ করে কংগ্রেসের দিক থেকে, আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে।”
পদত্যাগপত্রে অনিল লেখেন, “গতকালের ঘটনা বিবেচনা করে, আমি বিশ্বাস করি যে কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া আমার পক্ষে উপযুক্ত পদক্ষেপ… আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে কেরল রাজ্য নেতৃত্ব এবং ড. শশীকে। থারুর আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
কেরল কংগ্রেসের বিভিন্ন শাখা ঘোষণা করেছে যে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার সঙ্গে সম্পর্কিত বিতর্কিত তথ্যচিত্রটি রাজ্যে প্রদর্শিত হবে। কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (KPCC) সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আইনজীবী শিহাবুদ্দিন করয়াত বলেছেন, বিতর্কিত বিবিসি ডকুমেন্টারিটির উপর দেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন সাধারণতন্ত্র দিবসে দলের জেলা সদর দফতরে এটি দেখানো হবে।
এমন পরিস্থিতিতে টুইটারে অনিল লেখেন, “বিজেপির সঙ্গে গুরুতর মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, যারা ব্রিটিশ সম্প্রচারকারী এবং যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন বিদেশ সচিব জ্যাক স্ট্রে-র মতামতকে সমর্থন করে তারা আদতে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর বিষয়কেই পছন্দ করছে”। ইরাক যুদ্ধের নেপথ্যে অন্যতম মাথা হিসাবে বিবেচনা করা হয় স্ট্রে-কে। অনিলের মতে, “এ ধরনের মানসিকতা আমাদের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করবে”।
রবিবার কেন্দ্রের তরফে গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে তৈরি বিবিসি-র তথ্যচিত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। একদিকে যেখানে জেএনইউ-তে এই ডকুমেন্টারি দেখানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, সেখানে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হওয়ার পর দায়ের হয়েছে অভিযোগ। এই আবহে ডকুমেন্টারি বিতর্ক দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আমেরিকাতেও পৌঁছেছে।
প্রসঙ্গত, ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।