ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ২৪ অক্টোবর সকালের দিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD)। এই ঘূর্ণিঝড়টি ওডিশার পুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে, ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা উপকূলের কাছাকাছি রাতের দিকে স্থলভাগে আঘাত করবে। এটি ১০০-১১০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে বয়ে যাবে এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে ১২০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিতরকণিকার মতো ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের কাছাকাছি এই ঘূর্ণিঝড়ের আছড়ে পড়া প্রকৃতির আশীর্বাদের মতো হতে পারে। ম্যানগ্রোভ বন ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বাতাস থেকে রক্ষা করার একটি প্রাকৃতিক প্রাচীর হিসেবে কাজ করে।
রাজনগর ডিএফও (ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার) গোপীনাথ এস যাদব সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, “ভিতরকণিকার ম্যানগ্রোভ বন একটি জীববৈচিত্র্যময় প্রাচীর হিসেবে কাজ করে যা আমাদের ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করবে। আমরা কর্মীদের জাল এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করেছি, যাতে তাঁরা বিপদগ্রস্ত হলে কুমির এবং অন্যান্য প্রাণী ধরতে পারেন।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, একটি বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ তৈরি করা হয়েছে এবং তা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
প্রধান মুখ্য বনপাল (পিসিসিএফ) সুশান্ত নন্দা বলেন, “যদি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ভিতরকণিকার কাছাকাছি আছড়ে পড়ে, তা আশীর্বাদ স্বরূপ হবে। কারণ এখানে ২০০ বর্গ কিমি ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে, যা বাতাসের গতিবেগ কমাতে এবং জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে।”
তিনি আরও জানান যে, রাস্তা পরিষ্কারের জন্য পাঁচটি দল গঠন করা হয়েছে এবং যদি কুমির লোকালয়ে ঢুকে পড়ে, সেক্ষেত্রে দু’টি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিউর (এসওপি) ডিএফও-দের কাছে পাঠানো হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে ওয়্যারলেস সিস্টেম এবং সৌরবিদ্যুতের আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নন্দা আরও বলেন, “বন্যপ্রাণীরা সাধারণত এমন ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে অভ্যস্ত। হরিণ উচ্চভূমিতে চলে যেতে পারে এবং কুমির উচ্চ জোয়ারের সময় ঘুরে বেড়াতে পারে। এর জন্য আমরা দুটি দল তৈরি করেছি। প্রাপ্তবয়স্ক পাখিদের কোনো সমস্যা হবে না, তবে বাতাসের কারণে তাদের ছানাগুলি বিপদে পড়তে পারে।”