খবরঅনলাইন ডেস্ক: গভীর রাতে ভয়াবহ বিপর্যয় সিকিমে। উত্তর সিকিমের চুংথাং-এ বাঁধ ভেঙে তিস্তা নদীতে ব্যাপক জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তর সিকিমে এই বিপর্যয় ঘটে। ফলে অনেক জায়গাতেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
উত্তর সিকিমের লোনাক গ্লেসিয়াল লেক ফেটে যাওয়ার ফলেই এই চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন। স্থানীয় সংবাদপত্র ‘সিকিম টুডে’ জানিয়েছে, এই হঠাৎ বিপর্যয়ে উত্তর সিকিমে ২৩ জন সেনা জওয়ান নিখোঁজ হয়েছেন। সেনাবাহিনীর ‘ত্রিশক্তি কোর’ তাঁদের সন্ধানের কাজে নেমে পড়েছে।
বুধবার সকালের খবর, তিস্তার জলস্ফীতির কারণে মেলিতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ ভাবে ধসে গিয়েছে। এর ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে সিকিমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আশঙ্কা, তিস্তার এই বাড়তি জল উত্তরবঙ্গের সমতলে এসে পৌঁছোলে, জলপাইগুড়ি এবং সন্নিহিত অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।
প্রবল বৃষ্টি তো ছিলই, কিন্তু সেটাই ওই বাঁধ ভাঙার কারণ কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে গভীর রাতের এই ঘটনায় তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসনের নির্দেশমতো রংপো, সিংতাম প্রভৃতি শহরে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়।
ভোররাতের দিকে তিস্তার বাড়তি জল এসে পৌঁছোয় রংপো, সিংতামে। জলস্ফীতির কারণে ব্রিজ ভেঙে যায়। সিংতামে ছবির মতো সাজানো সুন্দর ইন্দ্রেনি সেতু নদীগর্ভে চলে যায়। শহরের নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করে। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় রংপোর ক্ষেত্রেও।
কেন এই বিপর্যয়? এর জন্য অনেকেই তিস্তার উপরে যথেচ্ছভাবে বাঁধ নির্মাণকে দায়ী করছেন। ডব্লিউ এস আর শেরিং নামে সিকিমের জঙ্গুর এক বাসিন্দা মন্তব্য করেছেন, “জঙ্গুর মানুষজন সব সময় এর প্রতিবাদ করে এসেছে। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। তার ফল আমরা পেলাম।”