ডাউন পেমেন্ট নেওয়ার পরে ইএমআই বা মাসিক কিস্তিতে ঘুষ নিচ্ছে দিল্লি পুলিশ?
নজিরবিহীন সিবিআই অভিযানে উঠে এসেছে তেমনই কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারী সংস্থার দায়ের করা এফআইআরগুলির একটি বিশ্লেষণ ইঙ্গিত দেয় যে অভিযুক্ত কর্মীরা প্রধানত একাধিক ক্ষেত্রে ঘুষের একটি অংশ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।
ঘটনা-১
পূর্ব দিল্লির পাটপারগঞ্জ থানায় পরিচালিত সর্বশেষ অভিযানে, সিবিআই ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় দুই হেড কনস্টেবলকে গ্রেফতার করে। সিবিআই-এর মতে, এক মহিলা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চুরি করা ফোন বিক্রির অভিযোগ এনে ৫০,০০০ টাকা দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। আলোচনার পর, তারা এর আংশিক হিসাবে ১১ হাজার টাকা নিতে রাজি হয় এবং বাকিটা সমান মাসিক কিস্তিতে।
ঘটনা-২
২১ জুন একটি থানায় হানা দেয় সিবিআই। সেই অভিযানের সময় পুলিশের কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার আরেকটি সাম্প্রতিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
অভিযুক্ত, একজন সাব-ইন্সপেক্টর, একজন অভিযোগকারীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ্মী টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কমিয়ে ২ লক্ষ টাকায় রফা হয়। একটি বিশেষ মামলায় অভিযোগকারীকে গ্রেফতার না করার জন্য ঘুষ দাবি করা হয়েছিল। অভিযোগকারীর কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকার প্রথম কিস্তি নেওয়ার সময় সিবিআই ফাঁদ ফেলে ওই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করে।
ঘটনা- ৩
কয়েক মাস আগে রিপোর্ট করা আরেকটি মামলায়, একজন পুলিশ কর্মী একটি মামলায় রেহাই করার বিনিময়ে একজন অভিযোগকারীর কাছ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন।
অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর ডাউন পেমেন্ট হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করতে এবং পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে বাকিটা সহজ কিস্তিতে নিতে রাজি হন। অন্য পক্ষ অবশ্য সিবিআই-এর শরণাপন্ন হয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে সিবিআই একটি অভিযান চালায়। যেখানে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার “ইএমআই” নেওয়ার সময় ওই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে এমনই সব চমকপ্রদ তথ্য। গত দু’বছরে, দিল্লি পুলিশে দুর্নীতির ঘটনাগুলি তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়। এর জেরে তদন্তকারী সংস্থাকে শহরের বিভিন্ন থানায় এবং পুলিশ কর্মীদের উপর ব্যাপক অভিযান চালানোর দিকে ঠেলে দিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই ডজনের বেশি পুলিশ কর্মীকে।