সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট (NEET)-এর ফলাফল নিয়ে অভিযোগ ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। গত ৪ জুন আচমকা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে পরীক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA)। আর তারপরেই এই ফলাফলে কেলঙ্কারির অভিযোগে সরব পরীক্ষার্থী, তাঁদের অভিভাবক থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল। এ বার সেই ঘটনার রেশ ধরেই এ বারের ফলাফল নিয়ে সিবিআই তদন্ত এবং পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলল আইএমএ জুনিয়র ডক্টক নেটওয়ার্কের।
ইন্ডিয়ান মেডিক্য়াল অ্যাসোসিয়েশন (IMA) জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক এ বারের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট বা নিট ২০২৪-এ তথাকথিত অনিয়মের জন্য সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (CBI) তদন্তের দাবি করেছে। এনটিএ চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার যোশীর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে, জুনিয়র ডাক্তাররা সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি ন্যায্য এবং স্বচ্ছ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধও জানায়।
আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্কের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলাফল সম্প্রচারে ব্যস্ত ছিল সংবাদমাধ্যম। সেই পরিস্থিতি পরীক্ষার ফলাফল সময়ের আগেই ঘোষণা করা হয়। এই তাড়াহুড়োর কারণ কী? তা ছাড়া কাট-অফেরও অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে।
চিঠিতে জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেছেন, “উপরোক্ত অনিয়মের জন্য আমরা নিট ২০২৪-এর ফলাফল নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাই৷ আমরা সমস্ত ছাত্রদের জন্য একটি ন্যায্য এবং স্বচ্ছ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ করছি।”
আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক কিছু পরীক্ষার্থীর সঠিক নম্বর না পাওয়া, ঘোষিত মার্কের অমিল এবং ওএমআর (OMR) শিটের তুলনায় গ্রেস মার্কের ধারণা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, কিছু পরীক্ষার্থী ৭১৮ এবং ৭১৯ নম্বর পেয়েছে। এই নম্বর পাওয়ার পিছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কারণ এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৮০টি প্রশ্ন থাকে। প্রত্যেকটির সঠিক উত্তরের জন্য ৪ (চার) নম্বর পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে কোনো পরীক্ষার্থী যদি সবকটি প্রশ্নের নির্ভুল উত্তর দেন, তিনি ৭২০ নম্বর পেতে পারেন। একটির জন্য কোনো উত্তর না করলে পেতে পারেন ৭১৬ নম্বর। অর্থাৎ, ৭১৯ অথবা ৭১৮ পাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এক্ষেত্রে যে গ্রেস মার্কেক কথা বলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী কোনো তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি।
পাশাপাশি, জুনিয়র চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছেন, নিট ২০২৪-এর প্রশ্নপত্র অনেক জায়গায় ফাঁস হয়েছে, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই সময়ে, অনেক পরীক্ষার্থী তাঁদের স্কোরকার্ডে ওএমআর শিটের তুলনায় ভিন্ন নম্বর পেয়েছেন। জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে যে, নিট ২০২৪-এর ফলাফল নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যেও বিশেষ কোনো কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে।
আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্কের জাতীয় আহ্বায়ক, ড. ইন্দ্রনীল দেশমুখ দাবি করেছেন, নেতিবাচক মার্কিং সিস্টেম অনুসারে পরীক্ষার্থীদের পক্ষে ৭১৮-৭১৯ নম্বর পাওয়া অসম্ভব। তাঁদের দাবিগুলি পূরণ না হলে, সর্বভারতীয় ধর্মঘটে যাবে আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক ।