আগামী মঙ্গলবার (৯ মে) নাগাদ একটি গ্রীষ্মকালীন ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে। যদিও এর গতিপথ এবং তীব্রতার বিবরণ এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি বলে বুধবার জানিয়েছে জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।
আইএমডি-র ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, সংখ্যাসূচক মডেলগুলির নির্দেশিকা ৯ মে নাগাদ একটি ঘূর্ণিঝড়ের গঠনের ইঙ্গিত দেয়, তবে ৭ মে নিম্নচাপ অঞ্চল গঠনের পরেই এর গতিবিধি এবং তীব্রতা নির্ধারণ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে তিনি জানান, দেশের উপকূলে এর আছড়ে পড়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পূর্বাভাস নেই। তবে ৭ মে থেকে সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
মহাপাত্র বলেন, ৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে এবং এর প্রভাবে ৭ মে নাগাদ একই অঞ্চলে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। যা ৮ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপে ঘনীভূত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “৯ মে নাগাদ কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় সঞ্চালনটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার একটি জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নিয়মিত আপডেট দেওয়া হবে”।
এ দিকে, বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে পূর্বাঞ্চলীয় আবহাওয়া অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী ৬ মে দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে। সেটি শক্তি সঞ্চয় করে ৭ মে লঘুচাপে পরিণত হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপের চেহারা নেবে লঘুচাপটি। ৯ মে মধ্য বঙ্গোপসাগরে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
আবহাওয়াবিদরাও বলছেন, এমনিতে এপ্রিল মাসে ভারতীয় সমুদ্রে কোনো ঘূর্ণিঝড় দেখা যায়নি। এ ছাড়া চলতি বছরের মে মাসের প্রথমার্ধে কোনো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আসার সম্ভাবনা খুবই কম। এখন বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘূর্ণিঝড় যদিও বা তৈরি হয়, সেটার সম্ভাব্য গতিমুখ হতে পারে তিনটি- ওড়িশা, মায়ানমার এবং পশ্চিমবঙ্গ। তবে, কোনো কিছুই এখনও নিশ্চিত নয়।
এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোকা’। এই নামটি দিয়েছে আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত ইয়েমেন। ‘মোকা’ শব্দের আক্ষরিক কোনো অর্থ নেই। ইয়েমেনের বন্দর শহর ‘মোখা’ (উচ্চারণ মোকা)-র নামে ঘূর্ণিঝড়ের এই রকম নামকরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখ কোন দিকে