মৌ বসু
সম্প্রতি মুম্বইয়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে যা গোটা দেশের মানুষের মনে নাড়া দিয়ে গেছে। চলন্ত ট্রেনের সামনে হাত ধরাধরি করে আত্মহত্যা করেছেন এক ভদ্রলোক ও তাঁর ছেলে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে ক্রমশ বাড়ছে আত্মহননের প্রবণতা। বিশ্বের আত্মহত্যার রাজধানী হয়ে উঠেছে ভারত।
এনসিআরবির প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালেই শুধু ভারতে ১,৭১,০০০ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এর ফলে প্রতি এক লাখপিছু মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেড়ে হয়েছে ১২.৪। যা দেশের মধ্যে সর্বকালীন রেকর্ড।
মহারাষ্ট্র সরকারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৪-এ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলায় ৫৫৭ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ১৭০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন অমরাবতী জেলাতেই। ১৫০ জন যবতমলে, ১১১ জন বুলধানা, আকোলায় ৯২ আর ওয়াশিমে ৩৪ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। গত বছর মহারাষ্ট্রে ২৮৫১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছিলেন বলে জানানো হয়েছে মহারাষ্ট্রের ত্রাণ বিভাগের রিপোর্টে।
মনোবিশারদ ও চিকিৎসকদের মধ্যে মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ ভারতীয়দের মধ্যে আত্মহত্যার প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। অনেকে আবার ঝোঁকের বশেই আত্মহত্যা করছেন। মূলত, চাকরি বা ব্যবসার সমস্যা, আর্থিক সমস্যা, সম্পর্কজনিত সমস্যা ও রোগভোগের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০-৯০% আত্মহত্যার কারণের মূলে রয়েছে মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ, বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যা। নবীন প্রজন্মের মধ্যে ভারতে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। একাকিত্বের পাশাপাশি আর্থিক সমস্যা, অসুখ ও প্রিয়জনকে হারানোর বেদনার কারণেও অনেকে ঝোঁকের বশেই আত্মহত্যা করে ফেলছেন বলে দাবি করা হয়েছে এনসিআরবি রিপোর্টে।
আরও পড়ুন
মদ আর মাদকের হাতছানি কতটা প্রাণঘাতী, কী তথ্য উঠে এল হু’র রিপোর্টে