মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় ১৯টি ভারতীয় কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে হায়দরাবাদের লোকেশ মেশিনস লিমিটেডও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, তাদেরই তৈরি ৫৫০টি দেশীয়ভাবে তৈরি অস্মি মেশিন পিস্তল উত্তর কমান্ডে সফলভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ পাবলিক ইনফরমেশন (ADGPI) এক ঘোষণায় জানায়, এই পিস্তলগুলি ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটেল (সন্নিকট যুদ্ধ) এবং বিশেষ অপারেশনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদনে আত্মনির্ভরতার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সেনাবাহিনীর কর্নেল প্রসাদ বানসোদ এবং প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-র যৌথ উদ্যোগে অস্মি মেশিন পিস্তলটি ডিজাইন করা হয়। এই পিস্তলটি তৈরি করেছে লোকেশ মেশিনস লিমিটেড। বলে রাখা ভালো, অস্মি (ASMI)-র মানে ‘গর্ব’, ‘আত্মসম্মান ও ‘কঠোর পরিশ্রম’৷
এডিজিপিআই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (আগের টুইটার)-এ জানায়, “অস্মি মেশিন পিস্তল হল একটি মজবুত, ছোট এবং নির্ভরযোগ্য অস্ত্র যা সন্নিকট যুদ্ধ এবং বিশেষ অপারেশনের জন্য আদর্শ। এর সেমি-বুলপাপ ডিজাইন এটিকে একহাতে ব্যবহারের উপযোগী করে, যা একযোগে পিস্তল এবং সাবমেশিন গান হিসেবে কাজ করে। ১০০ শতাংশ ভারতীয় এই অস্ত্র অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী আত্মনির্ভর ভারতের প্রতি তার অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করেছে।”
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে লোকেশ মেশিনস লিমিটেড ভারতীয় সেনাবাহিনীর উত্তর কমান্ডে অস্মি সাবমেশিন গান (SMG)-এর প্রথম বড়সড় সরবরাহ শেষ করে। এই অর্ডারে ৫৫০টি এসএমজি ছিল, যা আর্মামেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্ট (ARDE) পুনে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ডিজাইন করা হয়েছে। প্রায় ২.৪ কেজিরও কম ওজনের এই অস্ত্রটি আন্তর্জাতিক সমমানের মডেলগুলির তুলনায় ১০-১৫ শতাংশ হালকা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন লড়াইয়ে কৌশলগত সুবিধা প্রদান করবে।
তবে এই সাফল্য কিছু বিতর্কের মাঝেই এসেছে। মার্কিন সরকার গত ৩০ অক্টোবর লোকেশ মেশিনস সহ ১৯টি ভারতীয় কোম্পানিকে রাশিয়ার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেনের অভিযোগে নিষিদ্ধ করেছে। এ বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রক (MEA) জানিয়েছে, এসব লেনদেন ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করেনি।
MEA-র মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাদের মতে, নিষিদ্ধ লেনদেন এবং কোম্পানিগুলি ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করেনি। তবুও, ভারত তার স্বীকৃত অ-প্রসারণ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় বিভাগ এবং সংস্থাগুলির সাথে কাজ করছে, যাতে ভারতীয় কোম্পানিগুলিকে প্রযোজ্য রফতানি নিয়ন্ত্রণের বিধান সম্পর্কে সচেতন করা যায় এবং নতুন যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে সেগুলিও জানানো যায়, যা প্রয়োজন হলে ভারতীয় কোম্পানিগুলির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।”