ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের আংশিক গ্রহণ সত্ত্বেও গাজায় নতুন করে হামলা চালাল ইজরায়েল। শনিবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক হামলায় ৪ জন নিহত হন এবং দক্ষিণের খান ইউনিসে আরেক হামলায় মারা যান আরও ২ জন। মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইজরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করার আহ্বান জানান। ট্রাম্পের কথায়, “ইজরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমা ফেলা বন্ধ করতে হবে, যাতে পণবন্দিদের নিরাপদে দ্রুত বের করা যায়। এটি শুধু গাজার প্রশ্ন নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শান্তির বিষয়।”
হামাস ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবের কিছু শর্ত মেনে নিয়েছে— যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধের অবসান, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ না করার নিশ্চয়তা। এর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর জানায়, তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধানও ঘোষণা করেছেন, সৈন্যরা ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ কার্যকর করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সামরিক অভিযান কমানো হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক টানাপোড়েন
নেতানিয়াহু একদিকে গাজায় বন্দি পরিবারগুলির চাপের মুখে রয়েছেন, যারা দ্রুত জিম্মিদের ফেরানোর দাবি তুলেছেন। অন্যদিকে, তাঁর জোট সরকারের ডানপন্থি সহযোগীরা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন। ফলে দেশজুড়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে।
যুদ্ধের পটভূমি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে পণবন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে ইসরায়েলের হিসেবে ৪৮ জন এখনও গাজায় বন্দি, যাঁদের মধ্যে ২০ জন জীবিত।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় ইতিমধ্যেই ৬৬,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের হামলায় গাজার বড় অংশ ধ্বংস হয়েছে, ত্রাণ সীমিত হওয়ায় দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ।
নেতানিয়াহুর দফতর জানিয়েছে, “ইসরায়েল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতায় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”