ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬২ ও ১৪৬ (অ্যালিক অ্যাথানেজ ৩৮, রবীন্দ্র জাদেজা ৪-৫৪, মহম্মদ সিরাজ ৩-৩১)
ভারত: ৪৪৮-৫ (ধ্রুব জুরেল ১২৫, রবীন্দ্র জাদেজা ১০৪ নট আউট, কে এল রাহুল ১০০, শুভমন গিল ৫০)
অহমদাবাদ: আড়াই দিনেই শেষ হয়ে গেল পাঁচ দিনের টেস্ট। শনিবার চা-পানের বিরতির কিছু ক্ষণ আগে আত্মসমর্পণ করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে পরাজয় তাদের নিশ্চিতই ছিল, কিন্তু সেটা এত দ্রুত আসবে তা কল্পনাও করতে পারেননি ক্রিকেটবোদ্ধারা। লড়াইয়ের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা দেখা গেল না রস্টন চেজেদের মধ্যে।
শুক্রবার ভারত তাদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ৫ উইকেটে ৪৪৮ রানে। শনিবার তারা আর ব্যাট করতে নামেনি। ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেন শুভমন গিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাঠে ছিল সাড়ে তিন ঘণ্টা। খেলে ৪৫.১ ওভার। ৫ উইকেটে ৬৮ রান হাতে নিয়ে তারা মধ্যাহ্নভোজে যায়। মধ্যাহ্নভোজের পর তারা বাকি ৫ উইকেটে যোগ করে ৭৮ রান। ১৪৬ রানে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায়। ভারত জিতে যায় ইনিংস ও ১৪০ রানে।
‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ রবীন্দ্র জাদেজা
প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংস যেন ভারতীয় বোলারদের মোকাবিলা করতে ক্যারিবিয়ানরা আরও হিমশিম খেল। বিশেষ করে রবীন্দ্র জাদেজা আর মহম্মদ সিরাজ। সিরাজ ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নিলেন ৩১ রানে। আর চমকপ্রদ অল রাউন্ড পারফরম্যান্স রবীন্দ্র জাদেজা। ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করলেন আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে নিলেন চার চারটি উইকেট, ৫৪ রান দিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই জাদেজা হলেন ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’।

দুই ইনিংসে মোট ৭টি উইকেট নিলেন মহম্মদ সিরাজ। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
পতন ঠেকানোর চেষ্টা করেন অ্যাথানেজ
যথারীতি নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৪৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট পড়ে যায় তাদের। দলের পতন কিছুটা ঠেকানোর চেষ্টা করেন অ্যালিক অ্যাথানেজ। দলের ১২ রানে প্রথম উইকেট পড়ে। সিরাজের শিকার হন টাগেনারিন চন্দ্রপল (২৩ বলে ৮ রান)। জন ক্যাম্পবেলের সঙ্গী হন অ্যাথানেজ। এক প্রান্তে অ্যাথানেজ উইকেট ধরে রাখলেও, অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৩২ বলে ২৪ রান করে সাই সুদর্শনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ক্যাম্পবেল।
এর পর ৩ উইকেট পড়ে যায় ২২ রানের মধ্যে। জাদেজার দ্বিতীয় শিকার ব্র্যান্ডন কিং। ১৮ বলে ৫ রান করে নীতীশ রেড্ডিকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। দলের রান তখন ৩৪। ১ রান যোগ হতেই চতুর্থ উইকেটের পতন। ৪ বলে ১ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান অধিনায়ক রস্টন চেজ। এর পর জাদেজার তৃতীয় শিকার। দলের ৪৬ রানে তিনি তুলে নেন শাই হোপকে। ১৪ বলে ১ রান করে যশস্বীকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শাই।
ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে জাস্টিন গ্রিভ্সকে সঙ্গী করে ভারতের বোলিং আক্রমণ কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন অ্যাথানেজ। তাঁরা যোগ করেন ৪৬ রান। শেষ পর্যন্ত বিদায় নেন অ্যাথানেজ। তিনি করেন ৭৪ বলে ৩৮ রান। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে তাঁকেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান অ্যাথানেজ। ষষ্ঠ উইকেট পড়ে ৯২ রানে। আরও ৬ রান যোগ হতে দলের ৯৮ রানে ফিরে যান গ্রিভ্স ৫২ বলে ২৫ রান করে। সিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন গ্রিভ্স।
ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বাস ভারতীয় দলের। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
শেষ ২ উইকেটে এল ৪৮ রান
সেই ৯৮ রানেই পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অষ্টম উইকেট। শূন্য রানেই ফিরে গেলেন জোমেল ওয়ারিকান। শেষ ২টি উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরে যোগ হয় আরও ৪৮ রান। দলের ১২২ রানে জাদেজার বলে সিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জোহান লেনে (১৩ বলে ১৪ রান)। দলের ১৪৬ রানে কুলদীপ যাদবের বলে তাঁকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জেডেন সিল্স (১২ বলে ২২ রান)। ২৮ বলে ১৩ রান করে নট আউট থাকেন খ্যারি পিয়ারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ও ১৪০ রানে পরাজয় বরণ করেন রস্টন চেজেরা।
আরও পড়ুন
ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম টেস্ট: রাহুল-ধ্রুব-জাদেজার সেঞ্চুরি, বড়ো স্কোরের দিকে এগিয়ে চলেছেন শুভমনরা
ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম টেস্ট: সিরাজ-বুমরাহের কেরামতি, চা-এর আগেই গুটিয়ে গেল ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস