প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার কেদারনাথ ও হেমকুণ্ড সাহিব রোপওয়ে প্রকল্প অনুমোদন করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ১২.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ কেদারনাথ রোপওয়ের জন্য ৪,০৮১ কোটি টাকা এবং হেমকুণ্ড সাহিব রোপওয়ে নির্মাণে ২,৭৩০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে।
তীর্থযাত্রীদের জন্য যুগান্তকারী পরিবর্তন
কেদারনাথ রোপওয়ে প্রকল্প সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করবে এবং এটি ডিজাইন, বিল্ড, ফাইন্যান্স, অপারেট ও ট্রান্সফার (DBFOT) মডেলে নির্মিত হবে। সরকার-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (PPP) মাধ্যমে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে Tri-cable Detachable Gondola (3S) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে, যা ঘণ্টায় ১,৮০০ যাত্রী বহন করতে পারবে। প্রতিদিন প্রায় ১৮,০০০ তীর্থযাত্রী এই সুবিধার মাধ্যমে কেদারনাথে পৌঁছাতে পারবেন।
বর্তমানে সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পৌঁছাতে গৌরীকুন্ড থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার চড়াই পথ পেরোতে হয়, যা পায়ে হেঁটে বা টাট্টু-ডুলি ব্যবহারে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা সময় নেয়। নতুন রোপওয়ে চালু হলে মাত্র ৩৬ মিনিটেই যাত্রা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এতে তীর্থযাত্রীদের জন্য যাত্রা যেমন সহজ হবে, তেমনই পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
অর্থনৈতিক ও পর্যটন সম্ভাবনা
এই রোপওয়ে প্রকল্প কেবলমাত্র ধর্মীয় পর্যটনের ক্ষেত্রেই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নির্মাণ ও পরিচালনার সময় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া, হোটেল, রেস্তোরাঁ, ভ্রমণ সংস্থা ও পর্যটন-সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যবসার প্রসার ঘটবে, ফলে সমগ্র অঞ্চলের অর্থনীতি উপকৃত হবে।
সুপরিকল্পিত পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা
এই রোপওয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে, যা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কেন্দ্রীয় সরকার হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর ফলে কেদারনাথ ও হেমকুণ্ড সাহিব তীর্থযাত্রীদের কাছে আরও সহজে পৌঁছনো যাবে, যা সারাবছর পর্যটন চালু রাখার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
উন্নত পরিকাঠামোর দিকে এক ধাপ এগিয়ে
কেদারনাথ ও হেমকুণ্ড সাহিব রোপওয়ে প্রকল্প শুধুমাত্র যাত্রা সহজ করবে না, বরং এটি পর্যটন, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করে এই প্রকল্প শীঘ্রই চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।