কেরলের ওয়েনাড়ে মঙ্গলবার ভোরে পরপর তিন বার ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০৬ জনের। এই পাহাড়ি এলাকায় ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিস্তৃত অঞ্চল। ধসে চাপা পড়ে রয়েছেন শতাধিক মানুষ। ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আকাশপথেও উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ির কাছে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২২৫ জন জওয়ান উদ্ধারকাজে নিযুক্ত হয়েছেন। তিরুঅনন্তপুরমে প্রস্তুত রয়েছেন আরও ১৪০ জন জওয়ান। প্রয়োজনে তাঁদের আকাশপথে ওয়েনাড়ে নিয়ে আসা হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, নৌসেনাবাহিনীও উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে। এখনও পর্যন্ত ২৫০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। তাঁরা আপাতত অস্থায়ী শিবিরে রয়েছেন।
কেরলের মুন্ডাক্কাই, চুরালমালা, আত্তামালা এবং নুলপুড়া এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা ধসে যাওয়ার কারণে বহু জায়গায় পৌঁছোতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জানান, ‘‘দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হেলিকপ্টার আনা হয়েছে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে তাতে চেপে উদ্ধারকাজ সম্ভব হচ্ছে না।’’ তিনি আরও জানান, ১২৮ জন আহত হয়েছেন এবং তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে রাজ্যে। প্রশাসনের উদ্বেগ, এই ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরলে ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, এই কারণেই ভোরবেলায় ধস নেমেছে ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায়।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা জানিয়েছেন, আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে দেহ বার করে আনাই এখন সরকারের লক্ষ্য।