তিনদিনের বৈঠকের পর, বুধবার নতুন সুদের হার ঘোষণা করল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) মুদ্রানীতি কমিটি (MPC)। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে আবারও মূল সুদের হার বা রেপো রেট (Repo rate) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনুমান মতোই ২৫ বেসিস পয়েন্ট (bps) বৃদ্ধি করা হয়েছে রেপো রেট।
গত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের খুচরো মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৫.৭২ শতাংশ। তবে এখনও তা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাঙ্ক্ষিত স্তরের উপরে। সরকারি তথ্য অনুয়ায়ী, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলি আগের মাসের তুলনায় একটি প্রান্তিক পতন এবং খুচরো মূল্যস্ফীতি আরও সংযম দেখাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতেই আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এ দিন রেপো রেট বৃদ্ধির ঘোষণা করেন।
কত থেকে কত হল?
তিনি জানান, রেপো রেট ২৫ বিপিএস বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মুদ্রানীতি পর্যালোচনায়, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মূল সুদের হার ৩৫ বিপিএস বাড়িয়েছিল। তার পরে রেপো রেট ৬.২৫ শতাংশ হয়েছিল। গত বছরের মে থেকে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্পমেয়াদী ঋণের হার ২২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। ফের এক বার বৃদ্ধির ফলে রেপো রেট দাঁড়াল ৬.৫০ শতাংশ।
এসডিএফ (স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি) হার ৬ শতাংশ থেকে ৬.২৫ শতাংশে সামঞ্জস্য করা হয়েছে। এমএসএফ (মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি) হার ২৫ বিপিএস বেড়ে ৬.৭৫ শতাংশ হয়েছে। বলে রাখা ভালো, মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক মন্দা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপের রেশ ধরেই সুদের হার বাড়ানোর পথ ধরছে অন্য ব্যাঙ্কগুলিও।
প্রসঙ্গত, ভারতের খুচরো মূল্যস্ফীতি এক বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। টানা দ্বিতীয় মাসে ৬ শতাংশের নীচে ছিল মূল্যস্ফীতি। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি আরও কমতে পারে। ভারত-সহ বৈশ্বিক পর্যায়ে মূল্যস্ফীতির হার কমবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আরবিআই নিজের মুদ্রাস্ফীতির অনুমান কমাবে। এর ফলে বৈশ্বিক পণ্যের দাম এবং দেশীয় খাদ্যের দাম কমবে।
এ দিন নতুন সুদের হার ঘোষণা করার সময় আরবিআই গভর্নর বলেন, “কয়েক মাস আগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এখন অতটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না। প্রধান অর্থনীতিতে বৃদ্ধির সম্ভাবনা উন্নত হয়েছে, যখন মুদ্রাস্ফীতি নিম্নমুখী হয়েছে। যদিও প্রধান অর্থনীতিতে এখনও লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়েছে। পরিস্থিতি আদতে অনিশ্চিত রয়ে গেছে। “
বাড়বে ইএমআই!
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রেপো রেট কমানোর পরই বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলি নিজেরে সুদের হারে পরিবর্তন নিয়ে আসাটাই রীতি। ব্যাঙ্কগুলি সুদের হারে পরিবর্তন করলে গৃহঋণ, গাড়ি ঋণ-সহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রেও সুদের হার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও বাড়তে পারে ঋণগ্রহীতার জমা করা ইএমআই।
আরও পড়ুন: অভিযুক্তের ‘কুমারীত্ব পরীক্ষা’ ‘অংসবিধানিক’ ও ‘মর্যাদাহানীকর’, পর্যবেক্ষণে বলল দিল্লি হাইকোর্ট