নয়াদিল্লি: মণিপুর হিংসা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট হলফনামা পেশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার সকালে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার মাধ্যমে পেশ করা হলফনামায় এই মামলার বিচার রাজ্যের বাইরে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্র।
সূত্রের মতে, স্বয়ং স্বরাষ্ট্রসচিব এই হলফনামা পেশ করায় একটি বিষয় স্পষ্ট করা হল যে, মামলাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পরিচালনা করছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, গণধর্ষণ মামলা-সহ মণিপুরে দীর্ঘদিন ধরে চলা হিংসার ঘটনা সংক্রান্ত মামলা ছ’মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করার নির্দেশ চাওয়া হয়েছে হলফনামায়।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, গত বুধবার এই মামলায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিল মণিপুর সরকার। পর দিন, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের জন্য কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগকেও সুপারিশ করা হয়।
জানা গিয়েছে, ঘটনাগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত ছ’টি এফআইআর নথিভুক্ত করে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সিবিআই। মামলায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাইরাল ভিডিয়োর ঘটনায় সপ্তম এফআইআর নথিভুক্ত করতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত ৪ মে রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলেও দাবি। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পর দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
মূলত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছে কেন্দ্র। প্রতিটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে ছয় দফা আলোচনা হয়েছে। মেইতেই এবং কুকি উভয় গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মণিপুরকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রের আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কুকি এবং মেইতেইদের মধ্যে একটি বাফার জোন তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রের দাবি, মণিপুরে অতিরিক্ত ৩৫ হাজার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে আর তেমন কোনো বড়োসড়ো হিংসার ঘটনা ঘটেনি। মণিপুরের উপর তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর। প্রতিদিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে মণিপুর সম্পর্কে তথ্য নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব নেই। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিপুল সংখ্যক সরকারি কর্মচারী কাজে ফিরছেন এবং স্কুলগুলিও আবার চালু হচ্ছে।