ওয়েনাড় (কেরল): কেরলের ওয়েনাড় জেলায় ধসের ধ্বংসলীলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৩ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু। এ ছাড়াও বহু পরিবারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ১২৮ জনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রেই এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, ৩৪টা দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং ১৮টি দেহ তাঁদের পরিবারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ভোরে ধস নামে। সেই ধসের ফলে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চলে। বহু বাড়ি সাফ হয়ে যায়। ফলে হারিয়ে যায় বহু পরিবার। চারিদিকে বিশাল ধ্বংসের চিহ্ন। বহু বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, নদী-জলাশয়গুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। বহু গাছ পড়ে গিয়েছে। বহু রাস্তার চিহ্নটুকু পর্যন্ত নেই। বড়ো বড়ো পাথর পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে এসে রাস্তা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ফলে উদ্ধারকাজের খুব অসুবিধা হচ্ছে।
ওয়েনাড়ের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর মেঘশ্রী ডিআর জানিয়েছেন, শুধু সেনাবাহিনী আর এনডিআরএফ-ই নয়, রাজ্য পুলিশ ও দমকলের যে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আছে তারাও যোগ দিয়েছে উদ্ধারকাজে। তবে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ার ফলে উদ্ধারকাজ এখন বড়ো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
ধসের ধ্বংসলীলা চলে ওয়েনাড়ের মুন্ডাক্কাই, চুরালমালা, আত্তামালা এবং নুলপুড়া অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলে সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। খবর পাওয়া গিয়েছে, ধসের ফলে মুন্ডাক্কাই শহরটি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এবং সেই মুন্ডাক্কাই শহরে উদ্ধারকারী দল এখনও পৌঁছোতে পারেনি। কারণ মুন্ডাক্কাইয়ের সঙ্গে চুরালমালার যোগাযোগকারী যে সেতু রয়েছে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন নদী তাদের প্রবাহপথ পালটে মানুষ বসবাসের এলাকা দিয়ে বয়ে চলেছে। যার ফলে আরও বেশি করে এই এলাকাগুলি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া ১৭টি দেহ বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরের মালাপ্পুরমের চেলিয়ার নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলায় অন্ততপক্ষে ৪৫টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে এবং সেই সব শিবিরে ৩০৬৯ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, গোটা রাজ্য জুড়ে ১১৮টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে এবং সেই সব শিবিরে ৫৫৩১ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
৩০ ও ৩১ জুলাই রাজ্য জুড়ে সরকারিভাবে শোক পালন করা হবে। ওই দিন কোনো সরকারি অনুষ্ঠান বা উৎসব আয়োজন করা হবে না।
আরও পড়ুন
কেরলের ওয়েনাড়ে ধস, মৃত্যু ১০৬, শতাধিক মানুষ এখনও ধসে চাপা