Home খবর দেশ ‘ভারতরত্ন’ এম বিশ্বেস্বরায়ার জন্মদিনে আজ জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস, জেনে নিন কিছু তথ্য...

‘ভারতরত্ন’ এম বিশ্বেস্বরায়ার জন্মদিনে আজ জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস, জেনে নিন কিছু তথ্য  

0

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ভারতের অন্যতম প্রথম ইঞ্জিনিয়ার মোক্ষগুন্দম বিশ্বেস্বরায়ার (Mokshagundam Visvesvaraya) জন্মদিন আজ। সেই উপলক্ষ্যে আজ ১৫ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস (National Engineers Day)। দেশের অগ্রগতিতে ইঞ্জিনিয়ারদের কীর্তি ও অবদানকে স্মরণ করতে প্রতি বছর এই তারিখে এই দিবস পালন করা হয়। এবং একই সঙ্গে স্মরণ করা হয় এম বিশ্বেস্বরায়ার অবদানকেও।

কেন ইঞ্জিনিয়ার দিবস

ইঞ্জিনিয়ার দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজে ইঞ্জিনিয়ারদের মহৎ কীর্তি, তাদের সৃজনশীলতা এবং আত্মোৎসর্গকে উদযাপন করা হয় ওই দিনে। সারা বিশ্ব জুড়েই নানা জটিল সমস্যার সমাধান করে প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়াররা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালন করে হয়। এ বছরের জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবসের থিম হল, ‘টেকসই ভবিষ্যতের প্রকৌশল’ (engineering for sustainable future)।

এম বিশ্বেস্বরায়া সম্পর্কে কিছু তথ্য

জন্ম ও পড়াশোনা

স্যার মোক্ষগুন্দম বিশ্বেস্বরায়ার জন্ম ১৮৬১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তদানীন্তন মহীশুর রাজ্যের (অধুনা কর্নাটক) মুদ্দেনাহল্লি গ্রামে। বাবা মোক্ষগুন্দম শ্রীনিবাস শাস্ত্রী, মা বেঙ্কটলক্ষ্মী। বাবা ছিলেন সংস্কৃত পণ্ডিত। ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারান বিশ্বেস্বরায়া।

মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর বিশ্বেস্বরায়া পুনের কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ (তদানীন্তন বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ সায়েন্স) পড়াশোনা করেন। এখান থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা ডিগ্রি (ডিসিই, DCE) পান।

কর্মজীবন

বিশ্বেস্বরায়া ১৮৮৫ সালে ভারতের ব্রিটিশ সরকারের অধীন বোম্বে প্রেসিডেন্সিতে পূর্ত দফতরে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন।

ভারতীয় সেচ কমিশনে (Indian Irrigation Commission) যোগ দেওয়ার জন্য ১৮৯৯ সালে বিশ্বেস্বরায়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দাক্ষিণাত্য উপত্যকায় এক সূক্ষ্ম সেচব্যবস্থার রূপায়ণ করেন তিনি। তাঁরই নকশা করা এবং পেটেন্ট নেওয়া স্বয়ংক্রিয় ফ্লাডগেট বসানো হয় পুনের কাছে খড়কবসলা ড্যামে ১৯০৩ সালে। ড্যামে জলধারণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এই গেট। এর কার্যকারিতা উপলব্ধি করে গোয়ালিয়রের টিগ্রা ড্যামেও এই গেট বসানো হয়।

মহীশুরের কৃষ্ণ রাজ সাগর ড্যামেও (KRS Dam) বিশ্বেস্বরায়ার নকশা করা গেট বসানো হয়। পরে কোলাপুরের কাছে লক্ষ্মী তালাও ড্যামে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হন মোক্ষগুন্দম বিশ্বেস্বরায়া।

১৯০৬-০৭ সালে ভারতের ব্রিটিশ সরকার বিশ্বেস্বরায়াকে এডেনে (বর্তমানে ইয়েমেন) পাঠান সেখানকার জল সরবরাহ ব্যবস্থা ও নিকাশি ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখার জন্য। তিনি যে প্রকল্প রচনা করেন এডেনে সেটাই বাস্তবায়িত করা হয়।

১৯০৯-এর নভেম্বরে মহীশুরের দেওয়ানের আমন্ত্রণে তিনি মহীশুর রাজ্যের চিফ ইঞ্জিনিয়ার হন। তিনি কেআরএস ড্যামেরও চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পরে হোসাপেটের তুঙ্গভদ্রা ড্যামে বোর্ড অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর চেয়ারম্যান হন।

১৯১২ সালে মহীশুরের মহারাজা চতুর্থ কৃষ্ণরাজা ওয়াড়িয়র তাঁকে দেওয়ান নিযুক্ত করেন।

বিহারের মোকামায় গঙ্গার ওপর ব্রিজ কোথায় করা যাবে, তা নিয়ে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়েছিলেন এম বিশ্বেস্বরায়া। তখন তাঁর বয়স ৯০ বছর।   

নানা সম্মান

জীবনে নানা সম্মান পেয়েছেন এম বিশ্বেস্বরায়া। ১৯১১ সালে ইংল্যান্ডের রাজা সপ্তম এডোয়ার্ড তাঁকে ‘কম্প্যানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার’ (সিআইই, CIE) পদে নিযুক্ত করেন। ১৯১৫ সালে ইংল্যান্ডের পরবর্তী রাজা পঞ্চম জর্জ তাঁকে ‘নাইট কম্যান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার’ (কেসিআইই, KCIE) সম্মানে ভূষিত করেন। ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পরে এম বিশ্বেস্বরায়াকে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ সম্মানে সম্মানিত করা হয় ১৯৫৫ সালে। এ ছাড়াও লন্ডনের ইনস্টিটিউশন অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স-এর সাম্মানিক সদস্য হয়েছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এর ফেলোশিপ পান এবং ভারতের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে সাম্মানিক এলএলডি, ডিএসসি এবং ডিলিট ডিগ্রি অর্জন করেন। ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১৯২৩ সালের অধিবেশনের সভাপতি হয়েছিলেন এম বিশ্বেস্বরায়া।

প্রয়াণ                   

১৯৬২ সালের এপ্রিলে শতাধিক বছর বয়সে প্রয়াত হন এম বিশ্বেস্বরায়া।   

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version