১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান সভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জনগণমন অধিনায়ক জয় হে’ গানটিকে জাতীয় সংগীত করার পক্ষে রায় দেন।
গানটি প্রথম গাওয়া হয়েছিল ১৯১১ সালে ২৮ ডিসেম্বর কলকাতায় আয়োজিত জাতীয় কংগ্রেসের ২৬তম বার্ষিক অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে। সমবেত কণ্ঠে এই গানটি গীত হয়। এবং এর প্রথম স্তবকটি ১৯৫০ সালে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত রূপে স্বীকৃতি লাভ করে।
তবে এই গানটিকে ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীত করার ভাবনা প্রথম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মাথায় আসে। ১৯৩৭ সালে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি এই মর্মে এক প্রস্তাব দেন। এবং ছ’ বছর পর আজাদ হিন্দ ফৌজ (আইএনএ) গঠন করার পর নিজের সেই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেন নেতাজি।
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জুলাই আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের কথা ঘোষণা করা হয় এবং সেই দিনই প্রথম জাতীয় সংগীত হিসাবে ‘জনগণমন’ গাওয়া হয়। এর পর ওই বছরেরই ২৫ আগস্ট নেতাজি আনুষ্ঠানিক ভাবে আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনাপতির পদ গ্রহণ করেন ও ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আরজি হুকুমৎ-এ-হিন্দ প্রতিষ্ঠা করেন। ওই দিনও জাতীয় সংগীত হিসাবে ‘জনগণমন’ গাওয়া হয়েছিল।
আজাদ হিন্দ সরকারের সেক্রেটারি আনন্দমোহন সহায়কের নেতাজি দায়িত্ব দেন গানটির হিন্দুস্থানি ভাষায় অনুবাদের জন্য। আনন্দমোহন লয়ালপুরের তরুণ কবি হুসেনের সাহায্যে কাজটি সম্পাদন করেন। অনুবাদের সময় মূল গানের সামান্য পরিবর্তন করা হলেও তার ভাব ও সুর অক্ষুণ্ণ থাকে।
পরবর্তীকালে আনন্দমোহন সহায়ের লেখা থেকে জানা যায়, এই গান সেই সময় ভারত ও ভারতের বাইরেও বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এবং জাপান ও জার্মানির বিদ্বৎসমাজ এই গান শুনে অভিভূত হয়েছিলেন।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে আজাদ হিন্দ ফৌজ চট্টগ্রামে মওডক রণক্ষেত্রে জয়লাভ করে ভারতের মাটিতে প্রবেশ করে। সেই দিনই প্রথম ভারতের মাটিতে ‘জনগণমন’ ভারতের জাতীয় সংগীতরূপে বাজানো হয়।