Homeজন্মজয়ন্তীভাবনায় পার্থক্য থাকলেও গান্ধীজির প্রতি শ্রদ্ধায় কোনো দিন ভাঁটা পড়েনি সুভাষচন্দ্রের

ভাবনায় পার্থক্য থাকলেও গান্ধীজির প্রতি শ্রদ্ধায় কোনো দিন ভাঁটা পড়েনি সুভাষচন্দ্রের

প্রকাশিত

অরুণাভ গুপ্ত

সংগ্রহে আছে যা, তার থেকে কিছুটা তুলে গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজো সারি। নেতাজি মূল্যায়ন তখনও হয়নি, এখনও একই ছবি। যত গর্জায় তত বর্ষায় না। নামমাত্র দায় পালনের দায় নেই। সমালোচনা আমারও সাজে না। তবে সুযোগ পেলে কিছু চেষ্টা করি।

সাজাব যতনে

Netaji Subhas Chandra Bose

ক্ষুদিরামের ফাঁসি প্রতিটি বাঙালির মন ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল। তার তিন বছর পর ক্ষুদিরামের শহিদ দিবস পালন করলেন সুভাষচন্দ্র। তখন সুভাষচন্দ্র ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া। এমনকী প্রধান শিক্ষক বেণীমাধব দাসের আবেদনে সাড়া দিয়ে ব্রিটিশ সরকারের নিষিদ্ধ করা গান — ‘বঙ্গ আমার জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ’ গাওয়া হয়।

এই ঘটনা কথা প্রসঙ্গে বিলেতে বন্ধু দিলীপ রায়-কে বলায় তিনি স্তম্ভিত হন, সুভাষ তুমি ক্ষুদিরামকে স্মরণ করলে কেন, যে পথ ঠিক নয়।

সুভাষ প্রতুত্তরে বলেছেন, ওরা বোমা মেরেছে, এতে স্বাধীনতা হবে না। সকলকে এক জায়গায় আনতে পারলে স্বাধীনতা সম্ভব, নচেত নয়।

কী ভেবে সুভাষ এও বলেছেন, মাথায় রেখো দিলীপ, ওই বোমারুরাই কিন্তু ঝিমিয়ে থাকা ভারতকে ঝাঁকুনি দিয়ে জাগিয়েছিল। নয়তো আমাদের চেতনা স্থবিরতায় পড়ে থাকত। পরাধীন জাতি ব্যক্তিত্বের অভাবে ধুঁকত। ওদের ভূমিকা অস্বীকার করার জো নেই।

ঘটনা প্রবাহমান

netaji bose

আমরা শুধু জাবর কাটব। গান্ধীজির নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন তখন ব্যাপকতা পাচ্ছে। ছাত্র-যুবকরা উন্মাদনায় অস্থির হয়ে আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন। ওই সময় সুভাষ বিলেতে আইসিএস পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবছেন। ওই সময় মাতৃভূমির রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে সুভাষ দ্বিতীয় চিন্তা মাথায় না রেখে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনিও ঝাঁপাবেন। কাকতালীয়ভাবে একই জাহাজে স্বদেশমুখী হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ও সুভাষ। আলোচনা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ সুভাষকে বললেন, দেশের জন্য নিজেকে সঁপে দেওয়া মনস্থির করলে গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করো।

সুভাষচন্দ্র গুরুদেবের পরামর্শে গান্ধীজি সকাশে হাজির হলেন, বাক্যালাপ হল, তবে মানসিকভাবে পুষ্ট না হওয়ায় পথের ঠিকানা মিলল না। তখন স্বয়ং গান্ধীজি সুভাষকে পাঠালেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের কাছে। সুভাষচন্দ্র পেলেন আদর্শ পুরুষ, যিনি ত্যাগসর্বস্ব এক নির্ভেজাল দেশপ্রেমিক। সুভাষের উপলব্ধি, পেয়েছি সন্ধান, এঁকেই মনেপ্রাণে গ্রহণ করে এগোব।

আপসমুখী বনাম আপসহীন

netaji and gandhiji

যাইহোক, স্বাধীনতা আন্দোলন বা সংগ্রামে ভারতবাসী দু’ধারার মতের সঙ্গী হয়েছেন। এক আপসমুখী, যার পুরোধায় ছিলেন গান্ধীজি, আর অন্য দিকে ছিল আপসহীন সংগ্রাম, যার যথার্থ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মুখ ছিলেন সুভাষচন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই গান্ধীজি ও নেতাজির মধ্যে মতপার্থক্য সামনে এসে দাঁড়াল। অহিংস বনাম সহিংস ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে, তা হলে দেশের স্বাধীনতার কোন পন্থা গ্রহণ শ্রেয়। চরকা সাফল্য পাবে? গান্ধীজির আত্মপ্রত্যয়ী জবাব, হবে। চরকা পারবে।

যথার্থ বলেছেন কারণ চরকার মাধ্যমে তিনি প্রত্যন্ত গ্রামের নারীদের পর্যন্ত স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত করতে পেরেছেন। অনস্বীকার্য মস্তবড়ো সাফল্য। কথাসাহিত্যিক ও অন্তরে আদ্যোপান্ত বিপ্লবী শরৎচন্দ্র গান্ধীজির কাছে একই প্রশ্ন করেছেন এবং গান্ধীজির তরফে একই উত্তর পেয়েছেন। শরৎচন্দ্র ছাড়বার পাত্র নন। সহাস্যে পাল্টা বলেছেন, Swaraj can not be done by spiders but by the soldiers.

গান্ধীজি দীনবন্ধু এন্ড্রুজকে লিখিত চিঠিতে লিখতে দ্বিধা করেননি — … I feel Subhas is behaving like a spoilt child of the family.

এমন মন্তব্যের একটিই কারণ মতপার্থক্য। অথচ ভাবনায় পার্থক্য থাকলেও সুভাষচন্দ্রের গান্ধীজির প্রতি শ্রদ্ধায় কোনো দিন ভাঁটা পড়েনি। বরং তাঁর অপরিসীম ব্যক্তিত্ব-কে তিনি অকৃত্রিম কুর্নিশ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ তখন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লিখলেন, …তোমার অভিজ্ঞতা সর্বদেশ ব্যাপী।… দুঃখকে তুমি করে তুলেছ সুযোগ, বিঘ্নকে করেছ সোপান। সে সম্ভব হয়েছে যে হেতু কোনো পরাভবকে একান্ত সত্য বলে মানোনি। … হিংস্র দুঃসময়ের পিঠের উপর চড়েই বিভীষিকার পথ উত্তীর্ণ হতে হবে — এই দুঃসাহসিক অভিযানে উৎসাহ দিতে পারবে তুমি, এই আশা করে তোমাকে আমাদের যাত্রা নেতার পদে আহ্বান করি। …

দেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রয়াসে যাঁরা হাসি মুখে প্রাণ উৎসর্গ করেন তাঁদের সামনে একমাত্র স্বপ্ন স্বদেশের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন। তাঁরা মনে করেন যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট, অত্যাচার হল আগামী দিনের সোপান। বলাবাহুল্য, আমাদের নেতাজি এই স্বপ্নের চিরন্তন বীর নায়ক।

আরও পড়তে পারেন: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন সম্পর্কিত ১০টি চমকপ্রদ বিষয় জেনে নিন

সাম্প্রতিকতম

আন্দোলনরত কৃষকদের চণ্ডীগড়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাল কেন্দ্র

১৪ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আমন্ত্রণে কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক। এমএসপি সহ কৃষকদের দাবি নিয়ে আলোচনা হবে।

‘আইআইটিয়ান বাবা’ অভয় সিংহ জুনা আখড়া থেকে বহিষ্কৃত, গুরু অবমাননার অভিযোগ

আইআইটি বম্বের প্রাক্তনী এবং "আইআইটিয়ান বাবা" নামে পরিচিত অভয় সিংহ গুরু অবমাননার অভিযোগে জুনা আখড়া থেকে বহিষ্কৃত। আখড়া শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সইফ আলি খানের উপর হামলাকারী ‘বাংলাদেশি নাগরিক’, ভারতে এসে নামও পরিবর্তন করে, জানাল পুলিশ

সাইফ আলি খানের মুম্বইয়ের বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত একজন বাংলাদেশি নাগরিক। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।

রুবি পার্ক দিল্লি পাবলিক স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান

কলকাতা: রুবি পার্ক দিল্লি পাবলিক স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান হল শনিবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে। এটি...

আরও পড়ুন

আন্দোলনরত কৃষকদের চণ্ডীগড়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাল কেন্দ্র

১৪ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আমন্ত্রণে কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক। এমএসপি সহ কৃষকদের দাবি নিয়ে আলোচনা হবে।

‘আইআইটিয়ান বাবা’ অভয় সিংহ জুনা আখড়া থেকে বহিষ্কৃত, গুরু অবমাননার অভিযোগ

আইআইটি বম্বের প্রাক্তনী এবং "আইআইটিয়ান বাবা" নামে পরিচিত অভয় সিংহ গুরু অবমাননার অভিযোগে জুনা আখড়া থেকে বহিষ্কৃত। আখড়া শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত ১২ ভারতীয় নিহত, ১৬ জন নিখোঁজ, জানাল বিদেশ মন্ত্রক

রুশ সেনাবাহিনীতে ১২ জন ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করল বিদেশ মন্ত্রক। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৬ জন। দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত।
কেন লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠ করা হয় রতন টাটার সেরা উক্তি যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে