২ হাজার টাকার নোট বিনিময় করার সময় কোনো ফর্ম বা স্লিপের প্রয়োজন হবে কি না, তা নিয়েই চলছে জোর জল্পনা। রবিবার দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এসবিআই নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিল, এক সঙ্গে ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১০টি ২ হাজার টাকার নোট বিনিময় করতে কোনো “রিকুইজিশন স্লিপ” লাগবে না।
শুক্রবার (১৯ মে) ২ হাজার টাকার নোট নিয়ে একটি বড়ো ঘোষণা করেছে আরবিআই। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, বাজার থেকে এ বার ২ হাজার টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এর মানে এই নয় যে, ২ হাজার টাকার নোটের বৈধতা এখনই শেষ হয়ে যাবে।
গুজব!
২ হাজার টাকার নোট নিয়ে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে নানা গুজব। কেউ কেউ দাবি করেছে, নিষিদ্ধ নোটগুলি বিনিময় করার জন্য আধার কার্ডের মতো একটি পরিচয়পত্র জমা দেওয়া ছাড়াও একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। যদিও এসবিআই-এর এই নির্দেশিকায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেল।
সময়সীমা
তুলে নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকার নোট। শুক্রবার এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্য়াঙ্ক। ব্যাঙ্কগুলিকে অবিলম্বে ২ হাজার টাকার নোট ইস্যু করা বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে আরবিআই। তবে আপাতত এই নোটের বৈধতা অব্যাহত থাকবে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাঁদের কাছে ২ হাজার টাকার নোট রয়েছে, তা ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা করতে হবে। পাশাপাশি, একসঙ্গে কতগুলি ২ হাজার টাকার নোট বদল করা যাবে, তার একটি সীমাও বেঁধে দিয়েছে আরবিআই।
উর্ধ্বসীমা
এমনিতে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করা বা ডিপোজিটের ক্ষেত্রে কোনো ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কের চালু নিয়ম মতোই কোনো ব্যক্তি নিজের কাছে থাকা ২ হাজার টাকার নোট নিজের অ্যাকাউন্টে ফেলতে পারেন। এটিএম কর্নারে টাকা ডিপোজিটের মেশিনে আগের নিয়ম মতোই ২ হাজার টাকার নোট জমা করা যাবে। সেক্ষেত্রেও নতুন করে কোনো ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা হয়নি। শুধুমাত্র ২ হাজার টাকার নোট বদল করার জন্য একটি সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
আরবিআই জানিয়েছে, আগামী ২৩ মে (মঙ্গলবার) থেকে ব্যাঙ্কে গিয়ে এই নোট বদল করা যেতে পারে। কিন্তু একসঙ্গে শুধুমাত্র ১০টি ২ হাজার টাকার নোট বা ২০ হাজার টাকা বদল করা যাবে। এ ছাড়াও আরবিআই-এর ১৯টি আঞ্চলিক অফিস থেকেও নোট বদল করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রেও একসঙ্গে ২ হাজার টাকার ১০টি নোট বা ২০ হাজার টাকা মূল্যের নোট বদল করা যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মতে, ব্যাঙ্কের দৈনন্দিন কাজের যাতে ক্ষতি না হয়, তার জন্য নোট বদলের ক্ষেত্রে একটি সীমা (একসঙ্গে ১০টি ২ হাজার টাকার নোট) বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
কেন বাতিল
আচমকা ২ হাজার টাকার নোট সরিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন অনেকেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা প্রত্যাশিত ছিল। ২০১৬ সালে নোট বাতিলের পরই বাজারে আনা হয়েছিল ২ হাজার টাকার নোট। আরবিআই-এর দাবি, যে উদ্দেশ্যে এই ২ হাজার টাকার নোট বাজারে আনা হয়েছিল, তা পূরণ হয়েছে। কারণ বাজারে এখন অন্যান্য কম মূল্যের নোট পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। হ্রাস পেয়েছে ২ হাজার টাকা মূল্যের নোটের পরিমাণ। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের হিসাব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে বাজারে যে সংখ্যক ২০০০ টাকার নোট রয়েছে তাঁর মূল্য ৩.৬২ লক্ষ কোটি টাকা।