সাভারকারের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কৌশল। সোমবার সন্ধ্যায় একটি বৈঠকে এমনই কৌশল নিয়েছেন কংগ্রেস এবং ১৭টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের বাড়িতে নৈশভোজের ওই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। সাভাকরকে নিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। আর তার পর দিনই বিরোধীদের ওই বৈঠক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন উদ্ধব।
আদালতে দু’বছরের কারাদণ্ডের রায়ের পর রাহুল গাঁধীর সাংসদপদ খারিজের ইস্যুতে একজোটে বিরোধীরা। তবে এরই মধ্যে সাভাকরকে নিয়ে রাহুলের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে নিজের মন্তব্যের জন্য দু’বছরের জেল হওয়ার পরে এবং লোকসভায় তাঁর সাংসদপদ খারিজ হওয়ার পরে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, “আমার নাম সাভারকর নয়, ক্ষমা চাইব না”।
এই মন্তব্য ঠাকরের দলকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। এর আগেও রাহুল গান্ধীর মন্তব্য সম্পর্কে আগেও আপত্তি জানিয়েছিল ঠাকরের দল। রবিবার মহারাষ্ট্রের নাসিকে একটি অনুষ্ঠানে উদ্ধব জানান, সাভারকর আমাদের আদর্শ। জোট বজায় রেখে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে নামা জরুরি বলেও রাহুলকে বার্তা দেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “১৪ বছর ধরে আন্দামানের সেলুলার জেলে অকল্পনীয় অত্যাচার সহ্য করেছেন সাভারকর। আমরা তাঁর এই ত্যাগকে স্মরণে রাখতে চাই”।
বিজেপির প্ররোচনাতেই রাহুল সাভারকর সম্পর্কে ওই মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করেন উদ্ধব। মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটে ফাটল ধরার হুঁশিয়ারি দিয়ে এ বার ঠাকরে স্পষ্টতই বলেন, “আমরা সাভারকরের অপমান সহ্য করব না। সাভারকর আমাদের ভগবান। তাঁর প্রতি কোনো অশ্রদ্ধা বরদাস্ত করা হবে না। আমরা একসঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু আমাদের ঈশ্বরকে অপমান করলে আমরা তা সহ্য করব না।”
সূত্রের খবর, খাড়্গের বাড়িতে ওই নৈশভোজে কংগ্রেস ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা সমমনোভাবারন্ন দলগুলোর অনুভূতি বিবেচনা করবে। রাহুল গান্ধী এবং তাঁর মা সোনিয়া গান্ধীও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কংগ্রেস ছাড়াও ডিএমকে, শরদ পওয়ারের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি, নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড, তেলঙ্গনার ক্ষমতাসীন ভারত রক্ষা সমিতি, আরএস, সিপিএম, সিপিআই, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি, এমডিএমকে, কেসি, তৃণমূল, আরএসপি, আরজেডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, আইইউএমএল, ভিসিকে, সমাজবাদী পার্টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার প্রতিনিধিরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।