পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রা। এবার তাঁর পুরীর সফর ঘিরে উঠছে নতুন প্রশ্ন। তদন্তে উঠে এসেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জ্যোতি ওড়িশার পুরীতে এসে এক স্থানীয় নেটপ্রভাবীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওই তরুণীরও পাকিস্তান সংযোগ থাকতে পারে। সূত্রের খবর, ওই তরুণী সম্প্রতি পাকিস্তানের কর্তারপুরেও গিয়েছিলেন। ওড়িশা পুলিশের তরফে পুরীর ইউটিউবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু মেলেনি, তবে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে তদন্ত চলছে।
পুরীর পুলিশ সুপার বিনীত আগরওয়াল জানান, “জ্যোতি ও পুরীর ওই তরুণীর মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক ছিল এবং তাঁরা কোনও বেআইনি কাজে যুক্ত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জ্যোতির ভিডিয়ো ঘিরে সন্দেহ, পাকিস্তান সফরের নথি খতিয়ে দেখছে পুলিশ
জ্যোতি মলহোত্রার ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্রাভেল উইথ জো’— যেখানে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ১.৩২ লক্ষ। চ্যানেলে মূলত বিভিন্ন ভ্রমণ ভিডিও থাকলেও সম্প্রতি পাকিস্তান ভ্রমণ নিয়ে একাধিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে লাহোর, কটাস রাজ মন্দির, আনারকলি বাজার ঘুরে দেখার ভিডিও রয়েছে তাঁর চ্যানেলে।
এছাড়া, পাকিস্তানের খাবার, পোশাক ও সংস্কৃতি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের তুলনামূলক ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার কিছুদিন আগেই জ্যোতির পাকিস্তান সফরের সময়কাল নিয়ে এখন উঠছে প্রশ্ন।
‘জাট রনধাওয়া’ এবং পাকিস্তানি দূতাবাসের সংযোগে ঘনীভূত রহস্য
তদন্তে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে— জ্যোতির মোবাইলে ‘জাট রনধাওয়া’ নামে এক ব্যক্তির নম্বর সেভ ছিল। কে এই ব্যক্তি, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। আরও বিস্ফোরক তথ্য— জ্যোতির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশ নামে এক ব্যক্তির, যিনি দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনের একজন আধিকারিক ছিলেন।
এই দানিশকেই সম্প্রতি ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ভারত সরকার এবং তাঁকে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
গোপনীয়তা আইন অনুযায়ী মামলা, পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারের অভিযোগ
হরিয়ানার হিসারের সিভিল লাইন্স থানার পুলিশ শনিবার জ্যোতিকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি গোপনীয়তা আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জ্যোতিকে পাকিস্তানকে ইতিবাচকভাবে সমাজমাধ্যমে উপস্থাপন করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল।
হিসার পুলিশের আধিকারিক বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, “জ্যোতিকে হেফাজতে নিয়ে জেরা চলছে এবং তাঁর কাছ থেকে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
জ্যোতি মলহোত্রার গ্রেফতারি শুধু চরবৃত্তির অভিযোগে সীমাবদ্ধ নয়, তাঁর পুরী সফর, স্থানীয় ইউটিউবারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পাকিস্তানের হাই কমিশনের সঙ্গে যোগসূত্র— সব মিলিয়ে তদন্তের জাল আরও জটিল হয়ে উঠছে। এখন গোটা বিষয়টির দিকে কড়া নজর রাখছে কেন্দ্র ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

