দেহরাদুন: আজ নবম দিন। চারধাম প্রকল্পের সিল্কায়ারা সুড়ঙ্গে এখনও আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে, যদিও তাঁদের উদ্ধারের সব রকম চেষ্টা জারি আছে।
সোমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আটক শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরাখণ্ডের সিএমও (মুখ্যমন্ত্রীর অফিস) থেকে বলা হয়েছে, “উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনে কথা হয়েছে। উত্তরকাশীর সিল্কায়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য এবং তাঁদের ত্রাণের জন্য যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সব রকম সরঞ্জাম ও সম্পদ কেন্দ্রীয় সরকার সরবরাহ করবে।”
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে আটক শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করা হবেই। তিনি বলেন, “আটক শ্রমিকদের মনের জোর ধরে রাখাটাই সবচেয়ে বড়ো ব্যাপার।” ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি বলেছেন, আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে উদ্ধার করাটাই সরকারের প্রথম কাজ।
শুকনো ফল, মাল্টিভিটামিন এবং অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট পাঠানো হচ্ছে
আটক শ্রমিকরা যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন তার জন্য তাঁদের কাছে শুকনো ফল এবং মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেটের পাশাপাশি অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্টও পাঠানো হচ্ছে। খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বস্তু পাঠানোর জন্য এনএইচআইডিসিএল আর-একটি ছ’ ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট পাইপলাইন খুঁড়ছে। ৬০ মিটারের মধ্যে ৩৯ মিটার খোঁড়া হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক দফতরের সচিব অনুরাগ জৈন জানিয়েছেন, আটকে থাকা শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করে আনার ব্যাপারে সরকার দৃঢ়বিশ্বাসী। হয়তো এই কাজে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, “নতুন টানেলটা তৈরি হয়ে গেলে আরও খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর সুবিধা হবে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেই খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।”
জৈন জানান, শ্রমিকদের কাছে পৌঁছোনোর জন্য এবং তাঁদের উদ্ধার করে আনার জন্য পাঁচটি এজেন্সি পাঁচটি বিকল্প উপায় নিয়ে একযোগে কাজ করছেন।“ ভিতরে বিদ্যুৎ রয়েছে, সুতরাং আলো জ্বলছে। পাইপলাইন রয়েছে, তাই জল সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। চার ইঞ্চি পাইপ আছে। এটা কম্প্রেশনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এবং প্রথম দিন থেকেই এর মাধ্যমে খাবার যাচ্ছে।”
উদ্ধারকাজ কতটা এগোল সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে পরিবহণ সচিব বলেন, সরকার সব সময় শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। তাঁরা যাতে মানসিক ভাবে ভেঙে না পড়েন তার জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, “যে এলাকায় তাঁরা আটকে আছেন সেটা ২ কিমি দীর্ঘ এবং সাড়ে ৮ মিটার উঁচু। এখানে সুড়ঙ্গের কংক্রিটের কাজ হয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন
১৭০ ঘণ্টা পার! উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারে আর কত দিন সময় লাগবে