খবর অনলাইন ডেস্ক: বছর চারেক আগে সেপ্টেম্বরের একটি রাত। ২০২২ বিশ্বকাপের যোগ্যতা-অর্জন পর্বের খেলা চলছে দোহায়। সে দিনও ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল কাতার। বিশ্ব ফুটবল র্যাঙ্কিং-এ ভারতের অনেকটাই ওপরে কাতার। কাতার কার্যত এশিয়ান ফুটবলের অন্যতম পাওয়ারহাউস। সে দিন সেই কাতারের মুহুর্মুহু আক্রমণ ঠেকিয়ে ভারত ম্যাচ ড্র করেছিল। আর সাইডলাইনের ধারে বসে ভারতের লড়াই দেখেছিলেন হেড কোচ আইগর স্টিম্যাক।
ক্রোয়েশিয়ার এই প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় এ বারও সাইডলাইনের ধারে বসে ভারত বনাম কাতারের খেলা দেখবেন। কারণ, এই ভারতীয় দলের কোচও সেই আইগর স্টিম্যাক।
২১ নভেম্বর মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ২০২৬-এর ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ালিফায়ারের দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই কাতারের মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। এ বার বিশ্বকাপের যোগ্যতা-অর্জন পর্বের অভিযান ভারত যখন শুরু করে, তখন সুনীল ছেত্রীর এই দলের উপরে সকলের খুব যে আস্থা ছিল, তা নয়। কিন্তু গত ম্যাচে মনবীর সিংয়ের বিশ্বমানের গোলের সাহায্যে কুয়েতের বিরুদ্ধে জয় ভারত সম্পর্কে অনেককেই আস্থাবান করে তুলেছে। ভারতীয় দলও এখন অনেক বেশি দৃঢ়বিশ্বাসী – ‘আমরাও পারি’, এই বিশ্বাসে তারা এখন উজ্জীবিত। কাতারের বিরুদ্ধে ভারতের যদি কোনো ইতিবাচক ফল হয়, তা হলে এখন আর সেই ফলকে কেউ ‘ফ্লুক’ ভাববে না।
এটা মনে করেন ভারতের হেড কোচ আইগর স্টিম্যাকও। ভারত যে এখন ফুটবলে দু-একটা ‘সারপ্রাইজ’ ঘটাতে পারে, সে সম্পর্কে কোনো দ্বিমত নেই স্টিম্যাকের।
স্টিম্যাকের কথায়, “আমরা প্রতিটি দিক, প্রতিটি অবস্থান থেকে কাতারকে বিশ্লেষণ করেছি। আমরা খুব ভালো করেই জানি গতি আর শক্তির দিক থেকে তারা অন্তত সক্ষম। তাদের রক্ষণাত্মক এবং আক্রমণাত্মক অবস্থান একেবারে নিখুঁত। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের আট গোলই তার প্রমাণ। আরও আট গোল দিতে পারত তারা। তাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা বেশ কঠিন। আমি ছেলেদের বলেছি আগামী ম্যাচটা উপভোগ করতে। কুয়েতের বিরুদ্ধে জিতে প্রথম বড়ো কাজটা আমরা সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। আমি ছেলেদের বলেছি কোনো চাপ নেওয়ার দরকার নেই। কাতারের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিভা দেখাক।”
ভারতের হেড কোচ বলেছেন, “গ্রুপে দ্বিতীয় হওয়ার মতো ক্ষমতা যাদের আছে, তাদের হারাতে পারাটা খুবই প্রেরণাদায়ক। কোয়ালিফায়ারের পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য আমাদের গ্রুপে প্রথম দুটো স্থানের মধ্যে থাকতে হবে। কুয়েতের বিরুদ্ধে জয় আমাদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছে। এই গ্রুপে কাতারকে আগে থেকেই ফেভারিট হিসাবে ধরে রাখা হয়েছে। আমরা বিশাল বড়ো কিছু আশা করছি না। তবে আমরা জানি আমাদের সুযোগ আছে এবং দু’ হাত দিয়ে সেই সুযোগকে আঁকড়ে ধরতে হবে।”
রবিবার সারা দিন স্টিম্যাকের ছেলেরা ভালো ট্রেনিং নিয়েছেন। দলের মধ্যে একটা নতুন আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে হেড কোচ জানান। তিনি বলেন, “আমি বলছি, আমাদের আত্মবিশ্বাসের কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু প্রতিটি জয় সেই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। আমাদের যে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস আছে তা আমরা কিংস কাপ আর মারডেকা কাপেও দেখিয়েছি।”
“গত কয়েক বছর ধরে আমাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পালটানোর কাজ করেছি। এখন আমার ছেলেরা বিশ্বাস করে তারা যে কাউকে হারাতে পারে”, বলেন স্টিম্যাক। তাঁর মতে, কুয়েত থেকে পকেটে করে তিন পয়েন্ট নিয়ে আসা বিশাল একটা নিশ্চিন্ততার ব্যাপার। এটা একটা বড়ো কৃতিত্বও।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ফুটবল কোয়ালিফায়ার: কুয়েতকে হারিয়ে জায়গা মজবুত করল ভারত