নয়াদিল্লি: মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ঝড় বয়ে গিয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক কেরিয়ারে। মোদী পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে দু’বছরের কারাবাসের নির্দেশ। তার পর দিনই রাহুলের সাংসদপদ খারিজ করে দিয়ে লোকসভার সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তি। লোকসভার সদস্যপদ হারানোর পর শনিবার প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে আদানির সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী।
সাজা ও সাংসদপদ খারিজ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে অপরাধমূলক মানহানির মামলায় বৃহস্পতিবার গুজরাতের সুরত জেলা আদালত দু’বছরের সাজা দেয় রাহুল গান্ধীকে। সাজা ঘোষণার পর থেকেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। এর পর তাঁর সাংসদপদ খারিজ করার পর সেই ক্ষোভে ঘৃতিহুতি ঘটে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারায় রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। সেই ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সমাজকর্মী আভা মুরলীধরনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোদী-আদানি সম্পর্ক
এই আবহে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল বলেন, “আমি আপনাদের (মিডিয়া) অনেকবার বলেছি যে ভারতে গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে রয়েছে। প্রতিদিন আমরা এর নতুন নতুন উদাহরণ পাচ্ছি। আমি একটাই প্রশ্ন করেছিলাম যে, আদানিজির শেল কোম্পানিতে কে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে? আদানিজির টাকা নেই। এটা তাদের পরিকাঠামো ব্যবসা, টাকা অন্য কারো। প্রশ্ন হল, এই ২০ হাজার কোটি টাকা কার? আমি সংসদে এর প্রমাণ দিয়েছিলাম, যা আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে তুলে ধরেছিলাম। আদানিজি এবং মোদীজির মধ্যে সম্পর্কের কথা বলেছি। এই সম্পর্ক নতুন নয়, অনেক পুরনো। নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হন তখন থেকেই সম্পর্ক রয়েছে। বিমানের ছবি দেখিয়েছি। নরেন্দ্র মোদীজি নিজের বন্ধুর সঙ্গে বেশ আরামদায়ক ভাবে বসে ছিলেন। সংসদে সেই ছবিটি দেখেয়েছি”।
‘মিথ্যে বলছেন মন্ত্রীরা’!
রাহুল আরও বলেন, “আমার সম্পর্কে মন্ত্রীরা সংসদে মিথ্যে কথা বলেছেন। আমি না কি বিদেশি শক্তির থেকে সাহায্য় নিয়েছি। আমি এ ধরনের কোনো কাজ করিনি। স্পিকারকে বলেছি, সংসদে কোনো সদস্য অন্য সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সেই অভিযুক্ত সদস্যের জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু একাধিক চিঠি লেখার পরও কোনো জবাব পাইনি। আমি স্পিকারের কাছে গিয়ে সরাসরি বলি যে, কেন আমায় বলতে দেওয়া হচ্ছে না? আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু স্পিকার শুধুমাত্র হেসেই বিষয়টি এড়িয়ে যান”।
একই সঙ্গে রাহুল বলেন, “এর পর যা হয়েছে, আপনারা সবাই দেখেছেন। আমি প্রশ্ন করা বন্ধ করব না। আমি ভারতের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। এবং আমি তা করতেই থাকব। কিছুতেই ভয় পাই না। এটাই সত্য়ি। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় সাড়ে ৪ মাস জনতার মধ্য়ে ছিলাম। এটা আমার কাজ। আমি এ কাজ করতে থাকব”।
আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারদের আইনশৃঙ্খলারক্ষা সংক্রান্ত কোনও দায়িত্বপূর্ণ কাজ নয়, নির্দেশিকা রাজ্য পুলিশের