আধার কার্ড নাগরিকত্বের একমাত্র প্রমাণ হতে পারে না— সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারের রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার দাবি তুললেও সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানায়, আধারের আইন অনুযায়ী যে মর্যাদা নির্ধারিত হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে বলেছে, “যাচাইয়ের জন্য অনেক নথির মধ্যে আধারও একটি নথি হতে পারে। কিন্তু নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে আধারকে ধরা যাবে না।”
বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ যাওয়াকে কেন্দ্র করে এই মামলা শুরু হয়। আদালত আগেই জানিয়েছিল, ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন ভোটাররা। বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানোর সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়। লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি-র হয়ে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সওয়াল করে জানান, আধারকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরা হলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
তবে আদালত স্পষ্ট জানায়, আধার আইনের ৯ নম্বর ধারায় বলা আছে— আধার কার্ড কোনওভাবেই নাগরিকত্ব বা বাসস্থলের প্রমাণ নয়। একইসঙ্গে ২০১৮ সালে পুত্তস্বামী মামলায় পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চও জানিয়ে দিয়েছিল, আধার নম্বরের সঙ্গে নাগরিকত্বের অধিকার যুক্ত করা যাবে না।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী আদালতে বলেন, ভোটার তালিকায় আধার নম্বর ব্যবহার করা হচ্ছে মূলত ভুয়ো ভোটার রুখতে। বিহারের কিছু জেলায় আধারের সম্পৃক্ততা ১৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রের তরফেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা অবৈধভাবে আধার কার্ড সংগ্রহ করেছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, খসড়া তালিকা থেকে যাঁদের নাম ভুলভাবে বাদ পড়েছে তাঁদের খুঁজে বের করতে এবং অভিযোগ জানাতে সাহায্য করতে হবে।