খবর অনলাইন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে কানোয়ার যাত্রার রুটে যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, সে সব দোকানের মালিককে তাঁদের নাম ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই নির্দেশ নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে শাসক জোটে।
উত্তরপ্রদেশের এই নির্দেশ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিজেপির তিন সহযোগী দল। এদের মধ্যে দুটি দলের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। আর-এক শরিক দল এই নির্দেশ তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেছে, এটি বৈষম্যের দৃষ্টান্ত।
এই নির্দেশ নিয়ে প্রথমে সমালোচনায় মুখর হন লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান চিরাগ পাসোয়ান যিনি কেন্দ্রীয় সরকারে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের দায়িত্বে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় ওই নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে কোনোরকম বিভাজন তিনি একদমই বরদাস্ত করেন না। চিরাগ এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
চিরাগের পরেই এই নির্দেশ নিয়ে সমালোচনায় মুখর হন রাষ্ট্রীয় লোকদলের প্রধান জয়ন্ত চৌধরী। তিনিও ওই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, কানোয়ারিরা যখন কারও কাছ থেকে পরিষেবা চায় তখন তার ধর্ম জানতে চায় না। আর কানোয়ারিদের সেবা করার বিষয়টিকেও কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। উল্লেখ্য, জয়ন্ত চৌধরী কেন্দ্রীর সরকারের স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী।
জয়ন্ত চৌধরী বলেছেন, “মনে হচ্ছে, কোনোরকম চিন্তাভাবনা না করেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং একবার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সরকার পিছিয়ে না আসার ব্যাপারে গোঁ ধরে বসে আছে। এখনও সময় আছে প্রত্যাহার করে নেওয়ার। আর প্রত্যাহার না করলেও বিষয়টি নিয়ে সরকার যেন জোরাজুরি না করে।”
বিজেপির তৃতীয় সহযোগী যে দলটি এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে সেটি হল নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড)। দলের পক্ষে কে সি ত্যাগী বলেছেন, এই নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। ধর্ম এবং জাতপাতের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য থাকা উচিত নয়।
বিরোধী দলগুলির হুঁশিয়ারি
কানোয়ার যাত্রারুটে খাবারের দোকানের মালিকদের তাঁদের নাম ঝোলানোর যে নির্দেশ প্রথমে মুজফ্ফরনগর পুলিশ দিয়েছিল তা এখন উত্তরপ্রদেশের অন্যত্র এবং উত্তরাখণ্ডে বিস্তৃত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। তাদের বক্তব্য, মুসলিম ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করেই এই নির্দেশনামা জারি হয়েছে।
সংসদে বাজেট পেশের আগে সর্বদলীয় বৈঠক হওয়ার যে প্রথা আছে, সেই বৈঠক রবিবার বসেছিল। সেই বৈঠকে এই প্রসঙ্গ ওঠে। বিরোধী দলগুলি পরিষ্কার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেয়, সংসদের বাজেট অধিবেশনে এই বিষয়টি উঠবেই। কংগ্রেস নেতা কে সুরেশ জানান, তাঁদের দলের প্রবীণ নেতা গৌরব গগৈ এবং আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিং সর্বদলীয় বৈঠকে বিষয়টির সমালোচনা করেন।